পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছুটির পড়া و به আমাদের উপর দিয়াই যাক, ত্ৰিপুৰাবাসী যত কম মরে ততই ভালো । কিন্তু হরের কৃপায় আজ আমরা জিতিবই।” এই বলিয়া হর হর বোম বোম্ রব তুলিয়া কৃপাণ বর্শা লইয়া ঘোড়ায় চড়িয়া বিপক্ষদের অভিমুখে ছুটিলেন – তাহার দীপ্ত উৎসাহ তাহার সৈন্যদের মধ্যে ব্যাপ্ত হইয়া পড়িল । গ্রীষ্মকালে দক্ষিন বাতাসে খড়ের চালের উপর গিয়া আগুন যেমন ছোটে র্তাহার সৈন্তেরা তেমনি ছুটিতে লাগিল । কেহই তাহাদের গতিরোধ করিতে পারিল না। বিপক্ষদের দক্ষিণ দিকের বুহি ছিন্নভিন্ন হইয়া গেল। হাতাহাতি যুদ্ধ বাধিল । মানুষের মাথা ও দেহ কাটা শস্যের মতো শস্যক্ষেত্রের উপর গিয়া পড়িতে লাগিল। ইন্দ্রকুমারের ঘোড়া কাটা পড়িল । তিনি মাটিতে পড়িয়া গেলেন । রব উঠিল তিনি মারা পড়িয়াছেন । কুঠারাঘাতে এক মগ অশ্বারোহীকে অশ্বচু্যত করিয়া ইন্দ্রকুমার তৎক্ষণাৎ তাহার ঘোড়ার উপর চড়িয়া বসিলেন । রেকর্ণবের উপর দাড়াইয় তাহার রক্তাক্ত তলোয়ার আকাশে সূর্যালোকে উঠাইয়া বজ্রস্বরে চীৎকার করিয়া উঠিলেন, “হর হর বোম বোম্!” যুদ্ধের আগুন দ্বিগুণ জ্বলিয়া উঠিল । এই-সকল ব্যাপার দেখিয়া মগদিগের বাম দিকের বুহের সৈন্যগণ আক্রমণের প্রতীক্ষা না করিয়া সহসা বাহির হইয়া যুবরাজের সৈন্তের উপর গিয়া পড়িল । যুবরাজের সৈন্যেরা সহসা এরূপ আক্রমণ প্রত্যাশা করে নাই। তাহারা মুহুর্তের মধ্যে বিশৃঙ্খল হইয়া পড়িল । তাহাদের নিজের অশ্ব নিজের পদাতিকের উপর গিয়া পড়িল, কোন দিকে যাইবে ঠিকানা পাইল না। যুবরাজ ও ইশা খাঁ অসম সাহসের সহিত সৈন্যদের সংযত করিয়া লইতে প্রাণপণ চেষ্টা করিলেন কিন্তু কিছুতেই কৃতকার্য হইতে পারিলেন না । অদূরে রাজধরের সৈন্য লুক্কায়িত আছে কল্পনা করিয়া সংকেতস্বরূপ বার বার তুরী-নিনাদ করিলেন, কিন্তু রাজধরের সৈন্যদের কোনো লক্ষণ প্রকাশ পাইল না। ইশা খা বলিলেন, “র্তাহাকে ডাকা বৃথা । সে শৃগাল, দিনের বেলা গর্ত হইতে বাহির