পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Պօ ছুটির পড়া গুরুমহাশয় নিমেষের জন্ত বিহ্বল হইলেন, কিন্তু কর্তৃপক্ষের কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা কতক্ষণের জন্য ! তিনি লাল চক্ষু আরো লাল করিয়া আপত্তিকারীদের এককালে “শন্ন্যি’ ও ‘হাতছড়ি’র গুরুতর প্রভেদ অনুভূত করাইলেন। বুঝা গেল শন্ন্যি দারুণ গুতোয় এবং ‘হাতছড়ি’ তীব্র বেত্রাঘাতে পরিণত হইতে পারে। পাঠশালায় চ্যা-ভঁ্যা পড়িয়া গেল । সর্দার-পোড়োর পর্যন্ত সশঙ্ক হইয়া উঠিল । কেননা গুরুমহাশয় বড়োই রাগিয়া উঠিয়া প্রহারলোলুপ দীর্ঘ বেত্রখণ্ড চণ্ডীমণ্ডপতলে জোরে জোরে আস্ফালিত করিতেছিলেন। ঝড় থামিয়া যায়, আগুন নিভিয়া যায়, তা গুরুমহাশয়ের রাগ কতক্ষণ ? সর্দার-পোড়ো নিধিরাম এতক্ষণ হাকিয়া হাকিয়া ‘মহামহিম’ লিখিতেছিল এবং বোসদের বড়োবাবুর নাম ফাদিয়া কৰ্জ করিবার কায়দাটা শিখিতেছিল। যেমন সে বুঝিল, গুরুমহাশয়ের রাগ একটু কমিয়াছে, অমনি কাছে আসিয়া তামাকু সাজিতে চাহিল । রামধন ভট্টাচার্যের মুখে হাসি ধরে না । বলিলেন, “তামাক সেজে আনিস রে ব্যাটা ! তোর বাপের তামাক একটু চুরি করেই না-হয় আন । আর দেখিস্ যেন খেয়ে পুড়িয়ে শেষ করে আনিস নে ৷” নিধিরাম দুই লাফে পাঠশালা ত্যাগ করিল। তখন গুরুমহাশয় প্রসন্নচিত্তে ছেলেদের দিকে চাহিলেন । হু কাটি হাতে করিয়া বলিলেন, “হু কোর জল পুরতে যাবি কে রে।” “আমি যাব মশায়”, “আমি যাব মশায়”— রব চারি দিক হইতে প্রতিধ্বনিত হইল । ১০-১২ জন উমেদার আপনাদের স্থান ছাড়িয়া গুরুমহাশয়ের সম্মুখে হাজির হইল। এবং পরস্পর পরস্পরের হু কোর জল পুরার অসামর্থ্য প্রমাণ করিবার জন্য বিবিধ প্রমাণ প্রয়োগ করিল। গুরুমহাশয় সেক্রাদের ভোলাকেই যথোপযুক্ত পাত্র স্থির করিলেন, কেননা সে জল সমান করিয়া আনিতে পারে । মোধো বলিল, “ও হু কে এঁটো করে মশায়, তাই জল সমান 29 হয় ।