পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাঠশালা גר তারিণী বলিল, “ও হু কোয় মুখ দিয়ে সূর্যের দিকে জল ছিটোয় আর রামধনুক দেখে, আমি স্বচক্ষে দেখেছি মশায় ।” গুরুমহাশয় আবার বেত্ৰাস্ফালন করিলেন । মোধো এবং তারিণী । প্রমুখ ক্ষুব্ধ উমেদারগণ পিঠ বঁাচাইবার জন্য তাড়াতাড়ি আপন আপন স্থানে গিয়া বসিল । তখন ভোলা একাকী দাড়াইয়া প্রতিমুহূর্তে বেত্রাঘাতের অপেক্ষায় র্কাদিতেছিল। কিন্তু আজ অদৃষ্ট ভালো— হুকো উচ্ছিষ্ট করিতে নিষেধ মাত্র করিয়াই গুরুমহাশয় তাহাকে নির্দিষ্ট কাজে বিদায় দিলেন। বেলা এক প্রহর হইলে জলখাবারের ছুটি হইল। আজ যার যার সিধা দিবার পালা, গুরুমহাশয় তাহাদিগকে বিশেষ করিয়া ফরমাইশ করিলেন, কী কী জিনিস আনিতে হইবে । চাল, ডাল, তরকারি, তেল, মুনের তো কথাই নাই । আর সব ছেলেকে যে রোজই আটখান করিয়া ঘুটে আনিতে হইবে তাহা তো স্বতঃসিদ্ধ কথা, তা ছাড়া যার বাড়িতে ভালো জিনিস যাহা কিছু সম্প্রতি আসিয়াছে, তাহাও আনিতে হুকুম হইল। বাড়ির লোকে সহজে না দিলে চুরি করার ব্যবস্থাও দেওয়া হইল। আর আদেশ হইল, সর্দার-পোড়োদের কাহাকেও কলার পাতা কাটিয়া আনিতে হইবে, কাহাকেও-বা গুরুমহাশয়ের জল আনিয়া পাকের ঘর পরিষ্কার করিতে হইবে । পাঠশালার নিকট দিয়া বাগদি-বুড়ি লাঠি ঠকঠক করিয়া যাইতেছিল । ছুটিপ্রাপ্ত ছেলের দল দেখিয়া তার অন্তরাত্মা শুকাইয়া গেল । বুড়ি ভাবিল, ছেলেগুলো যদি এক সারি পিপীলিকা হইত তৰে অনায়াসে সে শত্ৰুকুল পদতলে দলিত করিতে পারিত । কিন্তু কেমন নিষ্ঠুর বিধির বিধান, বুড়িকে দেখিয়া আনন্দে ছেলের দল করতালি দিল, তার উদ্দেশে গাহিল— - বাগদি-বুড়ি গুড়িগুড়ি, দাত নেই খায় তালের মুড়ি । বুড়ি প্রথমে গান যেন শুনে নাই, এমনি ভান করিয়া গন্তব্য পথে