পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আলোক ও উত্তাপ । b@t নহে গরমও নহে, অর্থাৎ গোলার অণু যে স্থান জুড়িয়া এবং যে বেগে দোলে তোমার শরীরের অণু ঠিক ততটুকু স্থান জুড়িয়া এবং সেই বেগে তুলিতে অর্থাৎ বিকম্পিত হইতে থাকে। এক্ষণে যদি উত্তাপ প্রদান করিয়া এই গোলাটিকে পূর্বাপেক্ষা গরম করিয়া ইহার নিকট তোমার হাত লইয়া যাও তবে দেখিবে তোমার হাতে তাপ লাগিতেছে। তুমি তো গোলা স্পর্শ কর নাই, তবে তোমার হাতে তাপ লাগে কেন ? বলা হইয়াছে, ঈথর সর্বত্র এবং সকল পদার্থের ভিতর বর্তমান ; উত্তাপ দিতে দিতে গোলার অণুবিকম্পন যত বাড়িতে থাকে ঈথর সাগরে ততই প্রবল ও প্রবলতর তরঙ্গ উঠিতে থাকে। এই তরঙ্গমালা চতুর্দিকে ধাবিত হয়, এবং নিকটে যদি কোনো শীতল বস্তু থাকে তবে ঈথর তাহার মধ্যস্থিত অণুগুলিকে আপনার কিয়দংশ গতি দিয়া তাহাদের বিকম্পন বাড়াইয়া তোলে, অর্থাৎ সেই শীতল বস্তু ক্রমে উষ্ণ হইয়া উঠে । যে-কোনো বস্তু থাকিলেই যে এরূপ হইবে এমত নহে। এমন অনেক বস্তু আছে যাহাদের অণুগুলি ঈথরের গতি গ্রহণ না করিয়া অবাধে নিজের মধ্য দিয়া যাইতে দেয় । যাহা হউক, মনুষ্যহস্ত এরূপ বস্তু নহে, কাজেই উষ্ণ গোলা সম্মুখে ধরাতে তাহার অণুবিকম্পন বাড়ে ও আমাদের স্পর্শস্নায়ুর সাহায্যে হাতে তাপ অনুভব করি । উত্তাপ দিতে দিতে গোলাটি কেন রক্তবর্ণ হইয়া দৃষ্টিগোচর হয় তাহার কারণ বলিতেছি। পূর্বে বলা হইয়াছে যে, উত্তাপ দিলে পদার্থের পূর্বতন কম্পনগুলি বাড়িয়া উঠে। কিন্তু কেবল যে তাহাই হয় এমন নহে, পূর্বতন কম্পন বাড়িবার সঙ্গে সঙ্গে নূতন ও দ্রুততর কম্পনের উৎপত্তি হয়। নূতন কম্পনগুলি দ্রুততর বলিয়া এই বুঝাইতে চাই যে, পূর্বতন কম্পন অপেক্ষা ইহারা অল্প সময়ে সম্পাদিত হয় । উত্তাপ দিতে দিতে যখন একটি বিশেষ মাত্রায় দ্রুত কম্পন উৎপন্ন হয় তখন গোলা রক্তবর্ণ হইয়া উঠে । এই কম্পনজনিত ঈথর-তরঙ্গ যখন আমাদের চক্ষের পশ্চাতে যে দৃষ্টি-স্নায়ু-জাল আছে তাহা উত্তেজিত করে, তখন আমরা