পাতা:ছুটির পড়া - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o e ছুটির পড়া হয়। সেই দস্তুর অনুসারে সকলে সুরতানকে সেলাম করিতে বলিল। তিনি সদৰ্পে মাথা তুলিয়া বলিলেন, “আমার প্রাণ বাদশাহের হাতে— কিন্তু আমার মান আমার নিজের হাতে। কখনো কোনো মানুষের কাছে মাথা নোয়াই নাই, কখনো নোয়াইব না।” সভার লোকেরা আশ্চর্য হইয়া গেল, কিন্তু যশোবস্তের প্রতিজ্ঞ। স্মরণ করিয়া কেহ তাহাকে কিছু বলিল না। তাহারা একটা কৌশল করিল। একটি ছোটো দরজার মতো ছিল, তাহার মধ্য দিয়া গলিতে হইলে মাথা নিচু না করিলে চলে না— সেই দরজার ভিতর দিয়া তাহাকে বাদশাহের সম্মুখে যাইতে বলিল। কিন্তু পাছে মাথা হেঁট হয় বলিয়া তিনি আগে পা গলাইয়া দিয়া মাথা বাহির করিয়া আনিলেন । বাদশাহ রাজার এই নিভীকতায় রাগ না করিয়া সন্তুষ্ট হইয়া বলিলেন, “তুমি কোন রাজ্য পুরস্কার চাও, আমি দিব।” রাজা তৎক্ষণাৎ বলিলেন, “আমার অচলগড়ের মতো রাজ্য আর কোথায় আছে ? সেইখানেই আমাকে ফিরিয়া যাইতে দিন।” বাদশাহ সন্তুষ্ট হইয়া তাহাই অনুমতি করিলেন । এই রাজা এবং রাজবংশ চিরদিন আপনাদের স্বাধীনতা রক্ষা করিয়া আসিয়াছেন । কখনোই মোগল-সম্রাটের দাস হন নাই । যিনি বন্দী অবস্থাতেও নিজের মান রাখিয়া চলিতে পারেন র্তাহাকে দমন করিতে পারে কে ?