চিংড়িমাছের চচ্চড়ির সঙ্গে পান্তা ভাত যেদিন মেখে দিতেন অল্প একটু লঙ্কার আভাস দিয়ে, সেদিন আর কথা ছিল না। মাঝে মাঝে যখন আত্মীয়-বাড়িতে যেতেন, ঘরের সামনে তাঁর চটিজুতো-জোড়া দেখতে পেতুম না, তখন রাগ করে ঘরের থেকে একটা-কোনো দামি জিনিস লুকিয়ে রেখে ঝগড়ার পত্তন করতুম। বলতে হ’ত, ‘তুমি গেলে তোমার ঘর সামলাবে কে? আমি কি চৌকিদার!’
তিনি রাগ দেখিয়ে বলতেন, ‘তোমাকে আর ঘর সামলাতে হবে না, নিজের হাত সামলিয়ো।’
এ কালের মেয়েদের হাসি পাবে; তাঁরা বলবেন নিজের ছাড়া সংসারে কি পরের দেওর ছিল না কোনোখানে? কথাটা মানি। এখনকার কালের বয়স সকলদিকেই তখনকার থেকে হঠাৎ অনেক বেড়ে গিয়েছে। তখন বড়ো ছোটো সবাই ছিল ছেলেমানুষ।
এইবার আমার নির্জন বেদুয়িনি ছাদে শুরু হল আর-এক পালা— এল মানুষের সঙ্গ, মানুষের স্নেহ। সেই পালা জমিয়ে দিলেন আমার জ্যোতিদাদা।
১০
ছাদের রাজ্যে নতুন হাওয়া বইল, নামল নতুন ঋতু।
তখন পিতৃদেব জোড়াসাঁকোয় বাস ছেড়েছিলেন। জ্যোতিদাদা এসে বসলেন বাইরের তেতলার ঘরে। আমি একটু জায়গা নিলুম তারই একটি কোণে।
অন্দরমহলের পর্দা রইল না। আজ এ কথা নতুন ঠেকবে না,
৪৯