কমলা তখন বম্বাইতে রোগ-শয্যায় শায়িত। জওহরলালের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে অধিকাংশই একে একে জেলে চলিয়া আসিতে লাগিলেন, ভাই, ভগ্নিপতি, বোন—জওহরলালের বৃদ্ধা জননী রাস্তায় পুলিশ কর্তৃক প্রহৃত হইলেন—তাহার মাথা ফাটিয়া রক্ত বাহির হইয়া তিনি জ্ঞানশূন্য হইয়া রাস্তায় পড়িয়া রহিলেন। বহুক্ষণ সেইভাবে সংজ্ঞাহীন হইয়া থাকার পর এক পুলিশ কর্ম্মচারী তাঁহাকে তুলিয়া আনন্দভবনে রাখিয়া যায় ।
জেলের ভিতর যখন জওহরলাল তাহার সম্বন্ধে এই সংবাদ গাইলেন, তখন এক নিদারুণ বেদনায় তাঁহার মন ভরিয়া উঠিল, এই সম্পর্কে তাঁহার আত্মচরিতে তিনি লিখিতেছেন—“ঘটনার কয়েকদিন পরে জেলের ভিতর যখন সংবাদ পাইলাম যে, আমার বৃদ্ধা তনুদেহ জননী পুলিশের প্রহারে জ্ঞানশূন্য অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়িয়াছিলেন, তখন মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম, যদি আমি তখন সেখানে উপস্থিত থাকিতান, জানি না কি ভাবে তাহা গ্রহণ করিতাম, জানি না, অহিংস-নীতি তখন কতদূর আমাকে আটকাইয়া রাখিতে পারিত, হয়ত বারো বৎসর ধরিয়া যাহা বহু বেদনায় শিক্ষা করিয়াছিলাম, একমুহূর্ত্তে তাহা ভুলিয়া যাইতাম, ভুলিয়া যাইতাম, তাহার