পাতা:জওহরলাল - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৪৮).pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
জওহরলাল

 “যেটুকু প্রাঙ্গন আমার ভাগ্যে জুটিয়াছিল, তাহার মধ্যে সবুজের কোন চিহ্ন ছিল না। একটীও গাছ না। গাছ জন্মাইবে কোথায়? সেই ছোট্ট প্রাঙ্গনটুকু আগাগোড়া সিমেণ্ট দিয়া গাঁথা, কঠিন-পাথরের মত প্রাণহীন। পাঁচিলের উপর দিয়া অদূরে দু' একটী গাছ নজরে পড়িত—একমাত্র প্রাণের চিহ্ন। কিন্তু আমি যখন প্রথম সেই ঘরে প্রবেশ করি, তখন সেই গাছগুলিও শুকাইয়া ছিল—পত্র-পুষ্পহীন। সারাদিন তাহাদের দিকে চাহিয়া থাকিতাম—হঠাৎ কখন দেখি তাহাদের পত্রহীন রিক্ততার দৈন্য ঘুচিয়া গিয়াছে, দু' একটী করিয়্য সবুজ পত্র দেখা দিয়াছে শুষ্ক শাখা আবার সবুজ রঙে সাজিয়া উঠিতেছে দেখিতে দেখিতে মনে হইত, একি সুন্দর বিস্ময়কর পরিবর্ত্তন।

 “যে দু'|একটী গাছ আমার নয়নের নিত্য-আকর্ষণ ছিল, তাহাদের একটীতে একটা চিলের বাসা ছিল। সেই পক্ষি-মাতা আমার অন্তর জুড়িয়া যেন ছিল। দূর হইতে দেখিতাম, পক্ষি-মাতা আহার সংগ্রহ করিয়া আনিয়া তাহার শিশুদের খাওয়াইত—একটু একটু করিয়া তাহাদের ডানা মেলিয়া উড়িতে শিখাইত, ক্রমশঃ তাহাদের মধ্যে দুঃসাহসী দু' একটি শিশু-পক্ষী আদিম অভ্যাসবশত নীড় ত্যাগ করিয়া তীরের মত নীচে উড়িয়া যাইত, হয়ত অতর্কিতে কাহারও হাত হইতে কিছু ছিনাইয়া লইয়া আবার নীড়ে ফিরিয়া