আসিয়া বসিত দেখিতাম, কেমন ধীরে ধীরে তাহারা তাহাদের জাত-ব্যবসায় আয়ত্ত করিতেছে!
“সূর্য্যাস্ত থেকে সূর্য্যোদয় পর্য্যন্ত আমাদের সেলের ভিতর বন্ধ করিয়া রাখা হইত—শীতের দীর্ঘ রাত্রি পোহাইতে চাহিত না— ক্রমশঃ পড়িতেও আর ভাল লাগে না—তখন একা পা গুণিয়া গুণিয়া সেই সেলের ভিতর ঘুরিয়া বেড়াইতাম— পাঁচ-পা গুণিয়া অগ্রসর হইতাম আবার গুণিয়া পাঁচ-পা পিছাইয়া আসিতাম—মনে পড়িত, পশুশালায় লৌহ-পিঞ্জরের মধ্যে ভল্লুকদের সেই ভাবে ঘুরিয়া বেড়াইতে দেখিয়াছি। যখন কোন কিছুই ভাল লাগিত না, তখন কারাবাসের একঘেয়েমী-ব্যাধির যে ঔষধ আমি আবিষ্কার করিয়াছিলাম, তাহাই ব্যবহার করিতাম। সে ঔষধটীর নাম হইল “শিরাসন” মাটীর দিকে মাথা করিয়া দাঁড়াইয়া থাকা!”
বিরাট প্রাণচাঞ্চল্য লইয়া যে এই জগতে আসিয়াছে তাহাকে যদি জীবনের এবং যৌবনের শ্রেষ্ঠ অংশ, দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বৎসরের পর বৎসর কয়েক হাত পরিমিত ক্ষুদ্র রুদ্ধদ্বার প্রকোষ্ঠে একাকী কর্ম্মহীন অবস্থায় কাটাইতে হয়, তাহার সে বেদনা যে কি তীব্র ও মর্ম্মন্তুদ, তাহা উপরি-উক্ত অতিসংযত কথাগুলির আড়ালে উপলব্ধি করা যায়!