পাতা:জগন্নাথের রথ - শ্রী অরবিন্দ.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জগন্নাথের রথ

মধ্যেও পরম সুখী হইতে পারে। আবার দেখ তুমি যেমন নীরস পুণ্যে দিন কাটাইয়া সুখ পাইতেছ না, কেবল দুঃখ চিন্তা করিতেছ, ইনিও সেইরূপ নীরস পাপে দিন কাটাইয়া কেবলই দুঃখ চিন্তা করেন। তাই পুণ্যের ক্ষণিক সুখ ও পাপের ক্ষণিক দুঃখ বা পুণ্যের ক্ষণিক দুঃখ পাপের ক্ষণিক সুখ। এই দ্বন্দ্বে আনন্দ নাই। আনন্দ-আগারের ছবি আমার কাছে; আমার কাছে যে আসে, যে আমার প্রেমে পড়ে, আমাকে সাধে, আমার উপর জোর করে, অত্যাচার করে—সে আমার আনন্দের ছবি আদায় করে।” হরিমোহন আগ্রহপূর্বক শ্রীকৃষ্ণের কথা শুনিতে লাগিল। বালক আবার বলিল, “আর দেখ হরিমোহন, শুষ্ক পুণ্য তোমার নিকট নীরস হইয়া পড়িয়াছে অথচ সংস্কারের প্রভাব তুমি ছাড়িতে পার না; সেই তুচ্ছ অহঙ্কার জয় করিতে পার না। বৃদ্ধের নিকট পাপ নীরস হইয়া পড়িয়াছে অথচ সংস্কারের প্রভাবে তিনিও তাহা ছাড়িতে না পারিয়া—ইহজীবনে বরকষন্ত্রণা ভোগ করিতেছেন। ইহাকে পুণ্যের বন্ধন পাপের বন্ধন বলে। অজ্ঞানজাত সংস্কার সেই বন্ধনের রজ‍্জু। কিন্তু বৃদ্ধের এই নরকযন্ত্রণা বড় শুভ অবস্থা। তাহাতে তাহার পরিত্রাণ ও মঙ্গল হইবে।”

৩৮