মেমদের মত কটা, রঙ খারাপ হবার ভয়ে মরে থাকে। আমার কর্তাটিকে দেখেন নি? ওদের হল ফর্সার গুষ্টি, তাদের মধ্যে ওনার রঙ সবচেয়ে মাজা, তারপরেই আমার মেজননদ।
ছেলেদের জন্য বসিয়া কারাে সঙ্গে কথা বলিবার অবসর মন্দা পায় না। উঠানে দুই ছেলে চৌবাচ্চার জল নষ্ট করিতেছে দেখিয়া সে উঠিয়া গেল। বিষ্ণুপ্রিয়া বলিল, আপনার ননদটি বেশ। খুব সরল।
মুখ্যু।
বিষ্ণুপ্রিয়া প্রতিবাদ করিল না। আঁচলে মুখ মুছিয়া শ্যামার সঙ্গে চোখোচোখি হওয়ায় একটু হাসিল। বাহিরে ঝক্ঝকে রােদ উঠিয়াছিল। শহরতলীর বাড়ি, জানালা দিয়া পুকুরও চোখে পড়ে, গাছপালাও দেখা যায়। আর পাখি। শরৎকালে পথ ভুলিয়া কতগুলি পাখি শহরের ধারে আসিয়া পড়িছে।
বিষ্ণুপ্রিয়া বলিল, তােমার ছেলের জন্যে দুটো একটা জামাটামা পাঠালে কিছু মনে করবে ভাই? মনে যদি কর তাে স্পষ্ট বলাে, মনে এক মুখে আর এক কোরাে না।
বিষ্ণুপ্রিয়ার বলার ভঙ্গিতে শ্যামা একটু অবাক হইয়া গেল। বলিল, জামার দরকার তাে নেই।
দরকার নাই বা রইল, বেশিই না হয় হবে।—পাঠাব?
শ্যামা একটু ভাবিয়া বলিল, আচ্ছা।
আনকোরা নতুন জামা, দর্জিবাড়ি থেকে সােজা তােমায় দিয়ে যাবে,—আমার মেয়ের জামাটামার সঙ্গে ছোঁয়াছুয়ি হবে না ভাই।
হলই বা ছোঁয়াছুয়ি?
বিকালে বিষ্ণুপ্রিয়ার উপহার আসিল। কচি ছেলের দরকারী কয়েকটা জিনিস। গালিচার মত পুরু ও নরম ফ্লানেলের কয়েকটি কাঁথা, ছেলেকে জড়াইয়া পুঁটলি করিয়া কোলে নেওয়ার জন্য ধবধবে সাদা কোমল তিনটি তােয়ালে আর আধ ডজন সেমিজের মত পাতলা লম্বা জামা। শেষােক্ত পদার্থগুলি মন্দাকে বিস্মিত করে।
এগুলো কি বৌ? আলখাল্লা নাকি?