পাতা:জন্ম ও মৃত্যু - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
 জন্ম ও মৃত্যু
১৪০

 হারাণ চক্রবর্তী বলিলেন——কৈ কে দেখেছে—বলুক করে আমার মেয়ে এই এক বছরের মধ্যে—কিন্তু এমন ক্ষেত্রে পাড়া গাঁয়ে দেখিবার লোকের অভাব হয় না।

 দেখিয়াছে বৈ কি! বহু লোক দেখিয়াছে। পরের বাড়ি কোথায় কি হইতেছে দেখিবার জন্য যাহারা ওত পাতিয়া থাকে, তাদের চোখে অত সহজে ধূলা দেওয়া চলে না।

 অবশেষে কে বলিল—আচ্ছা, কাউকে দিয়ে সেই মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করা হোক না— সে যদি আমাদের সামনে স্বীকার করে, সে ওখানে যাতায়াত করে এবং সঙ্গে সঙ্গে ঘাট স্বীকার করে, কথা দেয় যে, আর কখনও এ কাজ সে করবে না, তবে না হয়—

 বিদ্যুৎ পাঁচিলের ঘুলঘুলিতে চোখ দিয়াই দাঁড়াইয়াছিল।

 কেশব গিয়া বলিল—মা আছিস্? রাজী হয়ে যা না ওরা যা যা বলছে। কেন মিছে মিছে—

 বিদ্যুৎ কাঁদিয়া বলিল—আপনি ওদের বলুন আমি সব তাতে রাজী আছি কাকা।

 সভার মধ্যে বাবাকে অপদস্থ হইতে দেখিয়া লজ্জায়, দুঃখে সে মরিয়া যাইতেছিল··· তার জন্যই তার নিরীহ পিতার এ দুর্দশা···তা ছাড়া তার দাদা শ্রীগোপালের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আজ পাঁচ ছ’ দিন হইতে যজ্ঞিবাড়ির নিমন্ত্রণ খাইবার লোভে অধীর হইয়া আছে, ছেলেমানুষ তারা কি বোঝে—অথচ আজ তাদের নিমন্ত্রণ হয় নাই, বাড়িতে আসিতে না পাইয়া মুখ চুন করিয়া বেড়াইতেছে—ইহা তাহার প্রাণে বড়ই বাজিয়াছে।

 ছোট মেয়ে সুবু তো কেবলই জিজ্ঞাসা করিতেছে—পিছিমা,