পাতা:জন্ম ও মৃত্যু - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প

 সন্ধ্যা হইবার দেরি নাই। রাস্তায় পুরোনো বইয়ের দোকানে বই দেখিয়া বেড়াইতেছি, এমন সময়ে আমার এক বন্ধু কিশোরী সেন আসিয়া বলিল, এই যে এখানে কি? চল চল জ্যোতিষীকে হাত দেখিয়ে আসি। তারানাথ জ্যোতিষীর নাম শোন নি? মস্ত বড় গুণী।

 হাত দেখানোর ঝোঁক চিরকাল আছে। সত্যিকার ভালো জ্যোতিষী কখনও দেখি নাই। জিজ্ঞাসা করিলাম—বড় জ্যোতিষী মানে কি? যা বলে তা সত্যি হয়? আমার অতীত ও বর্তমান বলতে পারে? ভবিষ্যতের কথা বললে বিশ্বাস হয় না।

 বন্ধু বলিল—চলই না। পকেটে টাকা আছে? দু-টাকা নেবে, তোমার হাত দেখিও। দেখ না বলতে পারে কি না। কাছেই একটা গলির মধ্যে একতলা বাড়ির গায়ে টিনের সাইনবোর্ডে লেখা আছে—তারানাথ জ্যোতির্বিনোদ—
 এই স্থানে হাত দেখা ও কোষ্ঠীবিচার করা হয়।
 গ্রহশান্তির কবচ তন্ত্রোক্ত মতে প্রস্তুত করি।
 আসুন ও দেখিয়া বিচার করুন।
 বড় বড় রাজা-মহারাজার প্রশংসাপত্র আছে। দর্শনী নামমাত্র।


 বন্ধু বলিল—এই বাড়ি।
 হাসিয়া বলিলাম—লোকটা বোগাস্‌ এত রাজা-মহারাজা যার ভক্ত, তার এই বাড়ি?