পাতা:জন্ম ও মৃত্যু - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৫
তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প 

ধারে ঐ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। রামরূপ সাধক-পুরুষ ছিলেন, বিবাহ করেছিলেন, ছেলেমেয়েও হয়েছিল কিন্তু সংসারে তিনি বড় একটা লিপ্ত ছিলেন না। রামরূপের বড় ভাই ছিলেন রামনিধি, প্রথম যৌবনেই অবিবাহিত অবস্থায় তিনি সন্ন্যাসী হয়ে গৃহত্যাগ করেন, আর কখনও দেশে ফেরেন নি। দেড়-শ বছর আগের কথা হবে।

 জিজ্ঞাসা করলুম—ঐ শিবমন্দিরটা ও-রকম মাঠের মধ্যে বেখাপ্পা জায়গায় কেন?

 —তা নয়া ওখানে তখন বহতা নদী ছিল। খুব স্রোত ছিল। বড় বড় কিস্তি চলত। কোন্ নৌকা একবার ওই মন্দিরের নিচের ঘাটে মারা পড়ে ব’লে ওর নাম লা-ভাঙার খেয়াঘাট।

 প্রায় চিৎকার করে বলে উঠলুম, খেয়াঘাট?

 তিনি অবাক্ হয়ে আমার দিকে চেয়ে বললেন—হ্যাঁ, জ্যাঠামশায়ের মুখে শুনেছি, বাবার মুখে শুনেছি, তা ছাড়া আমাদের পুরোনো কাগজপত্রে আছে শিবমন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লা-ভাঙার খেয়াঘাটের ওপর। কেন বল ত, এসব কথা তোমার জানবার কি দরকার হ’ল? বই-টই লিখছ না কি?

 ওদের কাছে কোন কথা বলি নি, কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস হ’ল এবং সে বিশ্বাস আজও আছে যে, কাশীর সেই সন্ন্যাসী রামরূপের দাদ। রামনিধি নিজেই। কোন অদ্ভুত যৌগিক শক্তির বলে দেড়শ বছর পরেও বেঁচে আছেন।

 বাড়ি থেকে কিছুদিন পরে আবার বেরই। বীরভূমের এক গ্রামে শুনলাম সাধু-সন্ন্যাসীর সন্ধানে সেখানকার শ্মশানে