পাতা:জন্ম ও মৃত্যু - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৯
তারানাথ তান্ত্রিকের গল্প 

নেই। তুমি মহাডামরী ভৈরবীকে দেখ নি—অতি বিকট তার চেহারা···তুমি ভয় পাবে। ছেড়ে দাও ও মন্ত্র।

 সাহসে ভর ক’রে বললাম—সাধনা করে আপনাদের আনতে হয় শুনেছি, আপনি এত সহজে আমাকে দেখা দিলেন কেন?

 —তোমার সন্দেহ হচ্ছে?

 আমার মনে হ’ল এই মুখ আমি আগে কোথাও দেখেছি, কিন্তু তখন আমার মাথার গোলমাল হয়ে গিয়েছে, কিছুই ঠিক করতে পারলাম না। বললাম—সন্দেহ নয়, কিন্তু বড় আশ্চর্য হয়ে গিয়েছি। আমি কিছুই জানি নে কে আপনারা।···যদি অপরাধ করি মাপ করুন, কিন্তু কথাটার জবাব যদি পাই—

 বালিকা বললে—মহাডামরীকে চেন না? আমাকেও চেন না? তা হ’লে আর চিনে কাজ নেই। এসেছি কেন জিজ্ঞেস করছ? দিব্যৌঘ পথের নাম শুননি তন্ত্রে? পাষণ্ডদলনের জন্যে ঐ পথে আমরা পৃথিবীতে নেমে আসি। তোমার মন্ত্রে দিব্যৌঘ পথে সাড়া জেগেছে। তাই ছুটে দেখতে এলাম।

 কথাটা ভালো বুঝতে পারলাম না। ভয়ে ভয়ে বললাম, তবে আমি কি খুবই পাষণ্ড?

 বালিকা খিলখিল করে হেসে উঠল।

 বললে—তোমার বেলা এসেছি সম্প্রদায় রক্ষার জন্যে···অত ভয় কিসের! আমি না তোকে লাথি মেরেছি? শ্মশানের পোড়া কাঠ ছুঁড়ে মেরেছি। তোকে পরীক্ষা না ক’রে কি সাধনার নিয়ম ব’লে দিয়েছি তোকে?

 আমি ভয়ানক আশ্চর্য হয়ে গিয়েছি, বলে কি?

 মেয়েটি আবার বললে—কিন্তু মহাডামরীর বড় ভীষণ রূপ, তোর যেমন ভয়, সে তুই পারবি নে—ও ছেড়ে দে—