পাতা:জন্ম ও মৃত্যু - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭১
বায়ুরোগ 

 তিন-চার দিন ধ’রে তারা সবাই আমাকে বিরক্ত করে মারলে। মনিব কাজে বেরিয়ে গেলেই তারা আসে। হেড্ কানুনগোর লোক এবং আরও অন্য লোক। কতরকম লোভ দেখায়, মনিবের বিরুদ্ধে আমায় রাগিয়ে তুলবার চেষ্টা করে।

 হেড্ কানুনগো বাবুর সঙ্গে একদিন পথে দেখা। তিনি ঘোড়ায় চেপে কাজে বেরিয়েছিলেন। আমায় দেখে বললেন—ওহে শোনো, আমার লোক তোমার কাছে গিয়েছিল?

 বললুম—আজ্ঞে হাঁ।

 —তা তুমি আসতে রাজী হও না কেন? শুনলাম সেদিন তোমায় মেরেচে। ছিঃ ছিঃ—কি বলে তুমি সেখানকার ভাত এখনও মুখে তুলচো? চলে এস ওবেলা থেকেই আমার ওখানে। কি বল?

 আমি বড় বিপদে পড়ে গেলুম। স্বয়ং হেড্ কানুনগো বাবু! তাঁকে ‘না’ বলি বা কি করে, এ তো আর উড়ে চাকর বা আরদালির দল নয়। হঠাৎ একটা বুদ্ধি মাথায় এল। বললুম— হুজুর, আজই যাব আপনার ওখানে। দেখুন না, মিছামিছি সেদিন অমনি মার দিলেন—

 —কি, হয়েছিল কি?

 —কিছু না, ওঁর সোনার বোতামের সেট টা আমি মেঝেতে কুড়িয়ে পাই। পেয়ে নিজের বাক্সে তুলে রাখি। ভেবেছিলুম এলে দিয়ে দেব। তারপর আর মনে নেই সন্ধ্যেবেলা। উনি এদিকে পরদিন সকালে বোতাম হারিয়েছে বলে খুব তোলপাড় করচেন বাসা। আমি তখন গিয়েচি দোকানে। সে সময় উনি আমার তোরঙ্গটা খুঁজে বোতাম দেখতে পেয়েছেন সেখানে। তাই আমি দোকান থেকে আসতেই বললেন—