পাতা:জাপানে-পারস্যে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পারস্যে
১৩৭

বিদায়, রাষ্ট্রসংস্কারকরা কেউবা গেলেন জেলে, কেউবা গেলেন বিদেশে। এই সময়কার বিবরণ নিয়ে শুসটার The Strangling of Persia নামক যে বই লিখেছেন তার মতো শোকাবহ ইতিহাস অল্পই দেখা যায়।

 এদিকে য়ুরোপের যুদ্ধ বাধল। তখন রুশিয়া সেই সুযোগে পারস্যে আপন আসন আরো ফলাও করে নেবার চেষ্টায় প্রবৃত্ত হল। অবশেষে বলশেভিক বিপ্লবের তাড়ায় তারা গেল সরে। এই সুযোগে ইংরেজ বসল উত্তর পারস্য দখল করে। নিরন্তর লড়াই চলল দেশবাসীদের সঙ্গে।

 ১৯১৯ খ্রীস্টাব্দে সার পার্সি কক্স এলেন পারস্যে ব্রিটিশ মন্ত্রী। তিনি পারসীক গবর্ণমেণ্টের এক দলের কাছ থেকে কড়ার করিয়ে নিলেন যে, সমগ্র পারস্যের আধিপত্য থাকবে ইংরেজের হাতে, তার শাসনকার্য ও সৈন্যবিভাগ ইংরেজের অঙ্গুলি সংকেতে চালিত হবে। একে ভদ্রভাষায় বলে প্রোটেকটোরেট। এর নিগূঢ় অর্থটা সকলেরই কাছে সুবিদিত,— অর্থাৎ ওর উপক্রমণিকা বৈষ্ণবের ঝুলিতে, ওর উপসংহার শাক্তের কবলে। যাই হক সম্পূর্ণ পার্লামেণ্টের কাছে এই সন্ধিপত্র স্বাক্ষরের জন্যে পেশ করতে কারো সাহস হল না।

 এই দুর্যোগের দিনে রেজা খাঁ তাঁর কসাক সৈন্য নিয়ে দখল করলেন তেহেরান। ওদিকে সোভিয়েট গবর্ণমেণ্ট সৈন্য পাঠিয়ে উত্তর পারস্যে ইংরেজকে প্রতিরোধ করতে এল। ইংরেজ পারস্য ত্যাগ করলে। এতকালের নিরন্তর নিপীড়নের পর পারস্য সম্পূর্ণ নিষ্কৃতি লাভ করল। সোভিয়েট রাশিয়ার নূতন রাজদূত রটস্টাইন এসে এই লেখাপড়া করে দিলেন যে, এতকাল সাম্রাজ্যিক রাশিয়া পারস্যের বিরুদ্ধে যে দলননীতি প্রবর্তন করেছিল সোভিয়েট গবর্ণমেণ্ট তা সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করতে