পাতা:জাপানে-পারস্যে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৭০
জাপানে-পারস্যে

আর ইচ্ছা করেন না অতএব আমার সাম্রাজ্য এই তোমার হাতে সমর্পণ করি।”

 এর পরে আফগান রাজত্ব। শাসনকর্তাদের মধ্যে হত্যা ও গুপ্তহত্যা এগিয়ে চলল। চারিদিকে লুটপাট ভাঙাচোরা। অত্যাচারে জর্জরিত হল ইস্ফাহান।

 অবশেষে এলেন নাদির শা, বাল্যকালে ছাগল চরাতেন, অবশেরে একদিন ভাগ্যের চক্রান্তে আফগান ও তুর্কিদের তাড়িয়ে দিয়ে এই রাখা চড়ে বসলেন শা আব্বাসের সিংহাসনে। তাঁর জয়পতাকা দিল্লি পর্যন্ত উড়ল। স্বরাজ্যে যখন ফিরলেন সঙ্গে নিয়ে এলেন বহুকোটি টাকা দামের লুটের মাল ও ময়ূরতক্ত সিংহাসন। শেষ বয়সে তাঁর মেজাজ গেল বিগড়ে, আপন বড়ো ছেলের চোখ উপড়িয়ে ফেললেন। মাথায় খুন চড়ল। অবশেষে নিদ্রিত অবস্থায় তাঁবুর মধ্যে প্রাণ দিলেন তার কোনো এক অনুচরের ছুরির ঘায়ে; শেষ হয়ে গেল বিজয়ী রাজমহিমা অখ্যাত মৃত্যুশয্যায়।

 তারপরে অর্ধশতাব্দী ধরে কাড়াকাড়ি, খুননাখুনি, চোখ-ওপড়ানো। বিপ্লবের আবর্তে রক্তাক্ত রাজমুকুট লাল বুদ্বুদের মতো ক্ষণে ক্ষণে ফুটে ওঠে আর ফেটে যায়। কোথা থেকে এল খাজার বংশীয় তুর্কি আগা মহম্মদ খাঁ। খুন করে লুট করে হাজার হাজার নারী ও শিশুকে বন্দী করে আপন পাশবিকতার চূড়ো তুললে ফর্মান শহরে, নগরবাসীর সত্তর হাজার উৎপাটিত চোখ হিসাব করে গণে নিলে। মহম্মদ খাঁর দস্যুবৃত্তির চরমকীর্তি রইল খোরাসানে, সেখানে নাদির শাহের হতভাগ্য অন্ধ পুত্র শা রুখ ছিল রাজা। হিন্দুস্থান থেকে নাদির শাহের বহুমূল্য লুটের মাল গুপ্ত রাজকোষ থেকে উদগীর্ণ করে নেবার জন্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিদিন শা রুখকে যন্ত্রণা দিতে লাগল। অবশেষে