পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
জাপান-যাত্রী

বুঝতে পারি―তখন আবশ্যককে ছাড়িয়ে, অনাবশ্যককে পেরিয়ে আনন্দলোকে তার অভ্যর্থনা দেখ্‌তে পাই,— তখন স্পষ্ট করে বুঝি, ঋষি কেন মানুষদের অমৃতস্য পুত্রাঃ বলে আহ্বান করে ছিলেন।


১১

 সেই খিদিরপুরের ঘাট থেকে আরম্ভ করে আর এই হংকংএর ঘাট পর্য্যন্ত, বন্দরে বন্দরে বাণিজ্যের চেহারা দেখে আসচি! সে যে কি প্রকাণ্ড, এমন করে তাকে চোখে না দেখ্‌লে বোঝা যায় না—শুধু প্রকাণ্ড নয়, সে একটা জবড়জঙ্গ ব্যাপার। কবিকঙ্কণচণ্ডীতে ব্যাধের আহারের যে বর্ণনা আছে,―সে এক-এক গ্রাসে এক-এক তাল গিলচে, তার ভোজন উৎকট, তার শব্দ উৎকট,―এও সেই রকম। এই বাণিজ্যব্যাধটাও হাঁস্‌ফাঁস কর্‌তে কর্‌তে এক-এক পিণ্ড মুখে যা পূরচে, সে দেখে ভয় হয়—তার বিরাম নেই, আর তার শব্দই বা কি! লোহার হাত দিয়ে মুখে তুলচে, লোহার দাঁত দিয়ে চিবচ্চে, লোহার পাকযন্তে চিরপ্রদীপ্ত জঠরানলে হজম কর্‌চে, এবং লোহার শিরা উপশিরার ভিতর দিয়ে তার জগৎজোড়া কলেবরের সর্ব্বত্র সোনার রক্তস্রোত চালান করে দিচ্ছে।

 এ’কে দেখে মনে হয় যে এ একটা জন্তু, এ যেন পৃথিবীর প্রথম যুগের দানব-জন্তুগুলোর মত। কেবলমাত্র তার ল্যাজের