পাতা:জাপান-যাত্রী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
জাপান-যাত্রী
৯১

প্রায় সকল সভ্যদেশেই মানুষ যে একটা কৃত্রিম মোহ-পরিবেষ্টন রচনা করেচে, জাপানীর মধ্যে অন্তত তার একটা আয়োজন কম বলে মনে হল, এবং অন্তত সেই পরিমাণে এখানে স্ত্রী-পুরুষের সম্বন্ধ স্বাভাবিক এবং মোহমুক্ত।

 আর একটি জিনিষ আমাকে বড় আনন্দ দেয়, সে হচ্ছে জাপানের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে। রাস্তায় ঘাটে সর্ব্বত্র এত বেশী পরিমাণে এত ছোট ছেলেমেয়ে আমি আর কোথাও দেখি নি। আমার মনে হল, যে কারণে জাপানীরা ফুল ভালবাসে, সেই কারণেই ওরা শিশু ভালবাসে। শিশুর ভালবাসায় কোন কৃত্রিম মোহ নেই―আমরা ওদের ফুলের মতই নিঃস্বার্থ নিরাসক্ত-ভাবে ভালবাসতে পারি।

 কাল সকালেই ভারতবর্ষের ডাক যাবে, এবং আমরাও টোকিয়ো যাত্রা কর্‌ব। একটি কথা তোমরা মনে রেখো—আমি যেমন যেমন দেখচি, তেম্‌নি তেম্‌নি লিখে চলেচি। এ কেবল একটা নতুন দেশের উপর চোখ বুলিয়ে যাবার ইতিহাস মাত্র। এর মধ্যে থেকে তোমরা কেউ যদি অধিক পরিমাণে, এমন কি, অল্প পরিমাণেও “বস্তুতন্ত্রতা” দাবী কর ত নিরাশ হবে। আমার এই চিঠিগুলি জাপানের ভূবৃত্তান্তরূপে পাঠ্য-সমিতি নির্ব্বাচন কর্‌বেন না, নিশ্চয় জানি। জাপান সম্বন্ধে আমি যা কিছু মতামত প্রকাশ করে চলেচি, তার মধ্যে জাপান কিছু পরিমাণে আছে, আমিও কিছু পরিমাণে আছি, এইটে তোমরা যদি মনে নিয়ে পড়—তাহলেই ঠক্‌বে না। ভুল বল্‌ব না, এখন আমায়