পাতা:জিজ্ঞাসা.djvu/২৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতীত্যসমুৎপাদ Հ8Գ ঐ রূপ দেখাই আমার স্বভাব । এই উত্তর সকলের সন্তোষজনক হইবে কি না জানি না ; কিন্তু বেদাস্ত বলেন, ছ হা ভিন্ন উত্তর নাই । বৌদ্ধ কিন্তু উত্তর দেন অন্তরূপে । তিনি ঐ অনিৰ্ব্বাচ্য আত্মার অস্তিত্ব মানেন না । যাহা একের নিকট স্বতঃসিদ্ধ, তাহা অন্তের নিকট । একেবারে অসিদ্ধ । তাহার নিকট নামরূপই সব অর্থাৎ যে জ্ঞানের সমষ্টি ও পরম্পর আমাদের প্রতীয়মান হয়, তাহাই সব জ্ঞান আছে, কিন্তু জ্ঞাত নাই। এই পরস্পরসম্পর্করাহত বিচ্ছিন্ন ক্ষণিক জ্ঞানগুলির পারিভাষিক নাম সংস্কার । তাহদের মধ্যে পরস্পর কোন সম্বন্ধ নাই, তবে একটা সম্বন্ধের কল্পনা করা হয় বটে। জ্ঞানগুলির অর্থাৎ বৌদ্ধভাষায় সংস্কারগুলির মধ্যে প্রতীয়মান যে সকল সম্বন্ধ, সেই সম্বন্ধ কল্পনা করিবার জন্ত বিজ্ঞাননামক পদার্থ বৌদ্ধ স্বীকার করেন । এই বিজ্ঞান বাহ্য জগতের বা পরসাদির মধ্যে পরম্পর সম্বন্ধ স্থাপন করে, এবং প্রাকৃতিক নিয়ম-গুলির স্বষ্টি করে, অন্তর্জগতের অঙ্গীভূত সুখদু:খাদির মধ্যে পরম্পর সম্বন্ধ স্থাপন করে, এবং বাহ্যজগতের সহিত অস্তর্জগতের আদানপ্রদান সম্বন্ধও স্থাপন করে । পি স্তু সেই বিজ্ঞান ও একপ্রকার ক্ষণিক জ্ঞান মাত্র। উহাও একটা অনিৰ্ব্বাচ্য কোন-একটা-কিছু নহে । এই সংস্কারসমূহ ও সংস্কারসমূহের উপর কর্তৃত্বকারী বিজ্ঞান উভয়েরই সমষ্টি একত্র করিয়া একটা মিথ্যা “আত্মা” বা “আমি” কল্পনা করা যায় বটে, কিন্তু উহা মিথ্যা কল্পনা । ঐ কল্পনাও বিজ্ঞানের কাজ । ইহার নাম অহংবিজ্ঞান বা বৌদ্ধ পরিভাষায় অলয়-বিজ্ঞান । উহাকে বেদাস্তের অনিৰ্ব্বাচ্য চেতনস্বভাব আত্মা বলা যায় না । সংস্কার সমূহ ও তাহদের অধিপতি বিজ্ঞানকে বাদ দিলে আর আমি বলিয়া বা আত্মা বলিয়৷ কিছু থাকে না । উহাদের সমষ্টি করিলে যাহা হয়, তাহাই নাম রূপ"। কিন্তু সেই নামরূপের সাক্ষী আত্মা বলিয়৷ কিছু নাই ।