পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হৃদয়কে ঠিক শীত সাহসিক হেমন্তলোক ভাবি ; চারিদিকে রক্তে রৌদ্রে অনেক বিনিময়ে ব্যবহারে কিছুই তৰু ফল হ’ল না ; এসে মানুষ, আবার দেখা যাক সময় দেশ ও সন্ততিদের কী লাভ হতে পারে। ইতিহাসের সমস্ত রাত মিশে গিয়ে একটি রাত্রি আজ পৃথিবীর তীরে ; কথা ভাবায়, ভ্রান্তি ভাঙে, ক্রমেই বতশোক ক'রে দিতে পারে বুঝি মানবভাবনাকে ; অন্ধ অভিভূতের মতো যদিও আজ লোক চলছে, তবু মানুষকে সে চিনে নিতে বলে : কোথায় মধু—কোথায় কালের মক্ষিকারা—কোথায় আহবান নাড় গঠনের সমবায়ের শান্তি-সহিষ্ণুতার ;– মানুষও জ্ঞানী ; তবুও ধন্য মক্ষিকাদের জান । কাছে-দূরে এই শতাব্দীর প্রাণনদীর রোল স্তব্ধ করে রাখে গিয়ে যে-ভূগোলের অসারতার পরে সেখানে নীলকণ্ঠ পাখি ফসল সূর্য নেই, ধূসর আকাশ,—একটি শুধু মেরুন রঙের গাছের মর্মরে আজ পৃথিবীর শূন্য পথ ও জীবনবেদের নিরাশা তাপ ভয় জেগে ওঠে ;–এ-সুর ক্রমে নরম-ক্রমে হয়তো আরো কঠিন হতে পারে ; সোফোক্লেস ও মহাভারত মানবজাতির এ-ব্যর্থতা জেনেছিল ; জানি ; আজকে আলো গভীরতর হবে কি অন্ধকারে । সূর্য নক্ষত্র নারী তোমার নিকট থেকে সর্বদাই বিদায়ের কথা ছিল সব চেয়ে অাগে ; জানি আমি । সে-দিনও তোমার সাথে মুখ-চেনা হয় নাই । তুমি যে এ-পৃথিবীতে রয়ে গেছ আমাকে বলে নি কেউ । ।