পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/১৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুয়ে থাকে ; রক্তে তার এসেছে ঘুমের স্বাদ এখন নির্জনে । আসন্ন এ-ক্ষেতটিকে ভালো লাগে—চোখে অগ্নি তার নিভে-নিভে জেগে ওঠে ;—স্নিগ্ধ কালো অঙ্গারের গন্ধ এসে মনে একদিন আগুনকে দেবে নিস্তার । কোথায় চার্টার প্যাক্ট কমিশন প্ল্যান ক্ষয় হয় ; কেন হিংসা ঈর্ষা গ্লানি ক্লান্তি ভয় রক্ত কলরব : বুদ্ধের মৃত্যুর পরে যেই তন্বী ভিক্ষুণীকে এই প্রশ্ন আমার হৃদয় ক'রে চুপ হয়েছিল—আজও সময়ের কাছে তেমনই নীরব। মানুষ যা চেয়েছিল গোধূলির রং লেগে অশ্বখ বটের পাতা হতেছে নরম ; খয়েরী শালিখগুলো খেলছে বাতাবীগাছে—তাদের পেটের শাদা রোম সবুজ পাতার নীচে ঢাকা প’ড়ে একবার পলকেই বার হয়ে আসে, হলুদ পাতার কোলে কেঁপে-কেঁপে মুছে যায় সন্ধ্যার বাতাসে । ও কণর গোরুর গাড়ি রয়ে গেছে ঘাসে ঐ পাখা মেলে ফড়িঙের মতো হরিণী রয়েছে ব’সে নিজের শিশুর পাশে বড় চোখ মেলে ; আঁক-বাকা শিং ছুঁয়ে তাদের মেরুর গোধূলির মেঘগুলো লেগে আছে ; সবুজ ঘাসের পরে ছবির মতন যেন স্থির ; দিঘির জলের মতো ঠাণ্ডা কালো নিশ্চিন্ত চোখ ; সৃষ্টির বঞ্চনা ক্ষমা করবার মতন অশোক অনুভূতি জেগে ওঠে মনে ।. তাথার নেপথ্য সব চারিদিকে — কুল থেকে অকুলের দিক নিরূপণে । শক্তি নেই আজ আর পৃথিবীর— তবু এই স্নিগ্ধ রাত্রি নক্ষত্রে ঘাসে ; কোথাও প্রাস্তরে ঘরে অথবা বন্দরে নীলাকাশে ; মানুষ যা চেয়েছিল সেই মহাজিজ্ঞাসার শাস্তি দিতে আসে । । ১৮৬