পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি, বছরের পার— তখন হঠাৎ যদি মেঠো পথে পাই আমি তোমারে আবার ! হয়তো এসেছে চাঁদ মাঝরাতে একরাশ পাতার পিছনে সরদ-সর কালো-কালো ডালপালা মুখে নিয়ে তার, শিরীষের অথবা জামের, বাউয়ের—আমের ; কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে । জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি-কুড়ি বছরের পার,— তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার ! তখন হয়তো মাঠে হামাগাড়ি দিয়ে পেচা নামে— বাবলার গলির অন্ধকারে অশথের জানালার ফাঁকে কোথায় লুকায় আপনাকে । চোখের পাতার মতো নেমে চুপি কোথায় চিলের ডানা থামে— সোনালি সোনালি চিল—শিশির শিকার ক’রে নিয়ে গেছে তারে— কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে । হাওয়ার রাত গভীর হাওয়ার রাত ছিলো কাল—অসংখ্য নক্ষত্রের রাত ; সারা রাত বিস্তীণ হাওয়া আমার মশারিতে খেলেছে ; মশারিটা ফুলে উঠেছে কখনো মেীশমী সমুদ্রের পেটের মতো, কখনো বিছানা ছি"ড়ে নক্ষত্রের দিকে উড়ে যেতে চেয়েছে ; এক-একবার মনে হচ্ছিলো আমার—আধো ঘামের ভিতর হয়তো— মাথার উপর মশারি নেই আমার, স্বাতী তারার কোল ঘেষে নীল হাওয়ার সময়ে শাদা বকের মত উড়ছে সে । কাল এমন চমৎকার রাত ছিলো । সমস্ত মত নক্ষত্রেরা কাল জেগে উঠেছিলো—আকাশে এক তিল ফকি ছিল না ; পথিবীর সমস্ত ধসের প্রিয় মতদের মুখও সেই নক্ষত্রের ভিতর দেখেছি আমি ; অন্ধকার রাতে অশ্বখের চড়ায় প্রেমিক চিল পরিষের শিশির ভেজা চোখের মতো ঝলমল করছিলো সমস্ত নক্ষত্রেরা ; জ্যোৎসনারাতে বেবিলনের রাণীর ঘাড়ের ওপর চিতার উজ্জবল চামড়ার শালের মতো জলজবল করছিলো বিশাল আকাশ ! কাল এমন আশ্চর্য রাত ছিলো । ఏఏ