পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফনীমনসার ঝোপে শাঁটবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে ; মধকের ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে এমনই হিজল—বট—তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরপে রুপ দেখেছিলো ; বেহালাও একদিন গাঙড়ের জলে ভেলা নিয়ে— কৃষ্ণা দ্বাদশার জ্যোৎসনা যখন মরিয়া গেছে নদীর চড়ায় – সোনালি ধানের পাশে অসংখ্য অশ্বখ বট দেখেছিলো, হায়, শ্যামার নরম গান শুনেছিলো,—একদিন অমরায় গিয়ে ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিলো ইন্দ্রের সভায় বাংলার নদী মাঠ ভটিফুল ঘুঙুরের মতো তার কোঁদেছিলো পায় । যতদিন বেঁচে আাছি আকাশ চলিয়। গেছে কোথায় আকাশে যতদিন বে“চে আাছি আকাশ চলিয়া গেছে কোথায় আকাশে অপরাজিতার মতো নীল হ’য়ে—আরো নীল—আরো নীল হ’য়ে আমি যে দেখিতে চাই ;–সে আকাশ পাখনায় নিঙড়ায়ে ল’য়ে কোথায় ভোরের বক মাছরাঙা উড়ে যায় আশিবনের মাসে, অামি যে দেখিতে চাই ;–অামি যে বসিতে চাই বাংলার ঘাসে ; পথিবীর পথ ঘুরে বহুদিন অনেক বেদনা প্রাণে স’য়ে ধানসিড়িটির সাথে বাংলার শমশানের দিকে যাব ব’য়ে যেইখানে এলো চুলে রামপ্রসাদের সেই শ্যামা আজো আসে, যেইখানে কলকাপেড়ে শাড়ি প’রে কোনো এক সুন্দরীর শব চন্দন চিতায় চড়ে—আমের শাখায় শক ভুলে ষায় কথা ; যেখানে সবচেয়ে বেশি রপ—সবচেয়ে গাঢ় বিষন্নতা ; যেখানে শুকায় পদ্ম—বহুদিন বিশালাক্ষী যেখানে নীরব ; যেইখানে একদিন শঙ্খমালা চন্দ্রমালা মানিকমালার কাঁকন বাজিত, আহা, কোনোদিন বাজিবে কি আর ! একদিন জলসিড়ি নদীটির পারে এই ৰাংলার মাঠে একদিন জলসিড়ি নদীটির পারে এই বাংলার মাঠে বিশীণ বটের নিচে শময়ে র’ব—পশমের মতো লাল ফল ঝরিবে বিজন ঘাসে,—বাঁকা চাঁদ জেগে র’বে—নদীটির জল বাঙালীর মেয়ের মতো বিশালাক্ষী মন্দিরের ধসের কপাটে আঘাত করিয়া যাবে ভয়ে-ভয়ে—তারপর যেই ভাঙা ঘাটে রুপসীরা আজ আর আসে নাকো, পাট শধ্যে পচে অবিরল, সেইখানে কলমীর দামে বে"ধে প্রেতিনীর মতন কেবল কাঁদিবে সে সারারাত,—দেখিবে কখন কারা এসে আমকাঠে সাজায়ে রেখেছে চিতা ৪ বাংলার শ্রাবণের বিসিমত আকাশ চেয়ে রবে ; ভিজে পেচা শান্ত সিনপথ চোখ মেলে কদমের বনে ఏ88