পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শোনাবে লক্ষীর গল্প—ভাসানের গান নদী শোনাবে নিজনে ; চারিদিকে বাংলার ধানী শাড়ি—শাদা শাঁখা—বাংলার ঘাস আকন্দ বাসকলতা ঘেরা এক নীল মঠ—আপনার মনে ভাঙিতেছে ধীরে-ধীরে,— চারিদিকে এইসব আশচয" উচ্ছৰাস– আকাশে সাতটি তারা যখন উঠেছে ফুটে আমি এই ঘাসে আকাশে সাতটি তারা যখন উঠেছে ফুটে আমি এই ঘাসে ব’সে থাকি ; কামরাঙা-লাল মেঘ যেন মত মীনয়ার মতো গঙ্গাসাগরের ঢেউয়ে ডুবে গেছে—আসিয়াছে শান্ত অনাগত বাংলার নীল সন্ধ্যা—কেশবতী কন্যা যেন এসেছে আকাশে,ঃ অামার চোখের পরে আমার মুখের পরে চুল তার ভাসে ; পথিবীর কোনো পথ এ কন্যারে দেখেনিকো—দেখি নাই, অক্ত অজস্র চুলের চুমা হিজলে কাঁঠালে জামে ঝরে অবিরত, জানি নাই এত রিগধ গন্ধ ঝরে রুপসীর চুলের বিন্যাসে পৃথিবীর কোনো পথে ঃ নরম ধানের গন্ধ—কলমীর প্রাণ, হাঁসের পালক, শর, পুকুরের জল, চাঁদা সরপ:টিদের মদ ঘাণ, কিশোরীর চাল-ধোয়া ভিজে হাত—শীত হাতখান, কিশোরের পায়ে-দলা মাথাঘাস,—লাল লাল বটের ফলের ব্যথিত গন্ধের ক্লান্ত নীরবতা—এৱি মাঝে বাংলার প্রাণ ঃ জাকাশে সাতটি তারা ৰখন উঠেছে ফুটে আমি পাই টের । কোথাও দেখিলি, অমাহ, এমন ৰিজন ঘাস—প্রান্তরের-পারে কোথাও দেখিনি, আহা, এমন বিজন ঘাস—প্রান্তরের পাৱে নরম বিমষ চোখে চেয়ে আছে—নীল বসুকে আছে তাহাদের গঙ্গাফড়িঙের নীড়, কচিপোকা, প্রজাপতি, শ্যামাপোকা ঢের, হিজলের ক্লান্ত পাতা—বটের অজস্র ফল ঝরে বারে বারে তাহাদের শ্যাম বুকে ;—পাড়াগরি কিশোরেরা যখন কান্তারে বেতের নরম ফল, নাটাফল খেতে আসে, ধমন্দল বীজের খোঁজ করে ঘাসে-ঘাসে,—বক তাহা জানে নাকো, পায়নাকো টেন্ন শালিক খঞ্জনা তাহা ; লক্ষ-লক্ষ ঘাস এই নদীর দু’ধারে নরম কান্তারে এই পাড়াগরি বুকে শ-য়ে সে কোন দিনের কথা ভাবে ; তখন এ জলসিড়ি শুকায়মি, মজেনি, আকাশ, বল্লাল সেনের ঘোড়া—ঘোড়ার কেশর ঘেরা ঘঙের জিনের শব্দ হ’তো এই পথে—আরো আগে রাজপুত্র কতোদিন রাশ টেনে-টেনে এই পথে—কি যেন খ:জেছে, আহা, হয়েছে উদাস ; আজ আর খোজাখ:জি নাই কিছ—নাটাফলে মিটিতেছে আশ– SBG নানন্দ (১ম)—১o