পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ক্ষীরাই গাছের পাশে একাকী দাঁড়ায়ে আজ বলিতে কি পারি কোথাও সে নাই এই পৃথিবীতে তাহার শরীর থেকে শ্বাস ঝরে গেছে বলে তারে ভুলে গেছে নক্ষত্রের অসীম আকাশ, কোথাও সে নেই আর—পাবো নাকো তারে কোনো পৃথিবী নিঙাড়ি ? এই মাঠে—এই ঘাসে—ফলসা এ ক্ষীরলয়ে যে গন্ধ লেগে অাছে আজো তার ; যখন তুলিতে যাই ঢেকিশাক দপুরের রোদে সষের ক্ষেতের দিকে চেয়ে থাকি – অন্ত্রাণে যে ধান ঝরিয়াছে, তাহার দু'এক গুচ্ছ তুলে নিই, চেয়ে দেখি নিজ ন আমোদে পথিবীর রাঙা রোদ চড়িতেছে আকাঙ্ক্ষায় চিনিচাঁপা গাছে – জানি সে অামার কাছে আছে আজো—আজো সে আমার কাছে আছে । এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে—সবচেয়ে স্বন্দর করুণ এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে সবচেয়ে সুন্দর করণে ঃ সেখানে সবুজ ডাঙা ভীরে আছে—মধুকুপী ঘাসে অবিরল ; সেখানে গাছের নাম ঃ কাঁঠাল, অশ্বথ, বট, জারুল, হিজল ; সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরণে ; সেখানে বারণী থাকে গঙ্গাসাগরের বসুকে,— সেখানে বরণ ; কণফুলী ধলেশ্বরী পদ্মা জলাঙ্গ রে দেয় অবিরল জল ; সেইখানে শঙ্খচিল পানের বনের মতো হাওয়ায় চঞ্চল, সেইখানে লক্ষম পেচা ধানের গন্ধের মতো অসফুট, তরণে ; সেখানে নেবদুর শাখা নয়ে থাকে অন্ধকারে ঘাসের উপর ; সমৃদশ ন উড়ে যায় ঘরে তার অন্ধকার সন্ধ্যার বাতাসে ; সেখানে হলুদ শাড়ি লেগে থাকে রুপসীর শরীরের পর – শঙ্খমালা নাম তার ঃ এ-বিশাল পথিবীর কোনো নদী ঘাসে তারে অার খুজে তুমি পাবে নাকো—বিশালাক্ষমা দিয়েছিলো বর, তাই সে জন্মেছে নীল বাংলার ঘাস আর ধানের ভিতর } কত ভোরে—দু’পছরে—সন্ধ্যায় দেখি নীল শুপুরির বন কত ভোরে- দু’পহরে—সন্ধ্যায় দেখি নীল শপরির বন বাতাসে কাঁপিছে ধরে ;–খাঁচার শকের মত গাহিতেছে গান কোন এক রাজকন্যা –পরনে ঘাসের শাড়ি—কালো চুল ধান বালার শালিধান—আঙিনায় ইহাদের করেছে বরণ, হৃদয়ে জলের গন্ধ কন্যার-ঘাম নাই, নাইকো মরণ তার আর কোনোদিন—পালণ্ডেক সে শোয় নাকো, হয় নাকো মান, লক্ষ পেচা শ্যামা আর শালিখের গানে তার জাগিতেছে প্রাণ সারাদিন—সারারাত বসুকে ক’রে অাছে তারে শপেরির বন ; সকালে কাকের ডাকে আলো আসে, চেয়ে দেখি কালো দাঁড়কাক ડહ8