পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমারে রাখিবে ঢেকে—ভোরে, রাতে, দ'-পহরে পাখির হৃদর ঘাসের মতন সাধে ছেয়ে র’বে—রাতের আকাশ নক্ষত্রের নীল ফুটে ফুলে রবে ;–বাঙলার নক্ষত্র কি নয় ? জানি নাকো ঃ তবুও তাদের বলকে স্থির শান্তি–শান্তি লেগে রয় ঃ আকাশের বনকে তারা যেন চোখ—শাদা হা ত—যেন স্তন ঘাস— । অশ্বথ বটের পথে অনেক হয়েছি আমি তোমাদের সাথী অশ্বখ বটের পথে অনেক হয়েছি আমি তোমাদের সাথী ; ছড়ায়েছি খই ধান বহুদিন উঠানের শালিখের তরে ; সন্ধ্যায় পুকুর থেকে হাঁসটিরে নিয়ে আমি তোমাদের ঘরে গিয়েছি অনেক দিন,—দেখিয়াছি ধােপ জনালো, ধরো সন্ধ্যাবাত্ত থোড়ের মতন শাদা ভিজে হাতে,—এখনি আসিবে কিনা রাক্তি বিননি বেধেছ তাই—কাঁচপোকাটিপ তুমি কপালের পরে পরিয়াছ—তারপর ঘামায়েছ ; কতকাপাড় অচিলটি ঝরে পানের বাটার পরে ; নোনার মতন নম্ন শরীরটি পাক্তি নিজন পালণ্ডেক তুমি ঘামায়েছ,—বউকথাকওটির ছানা নীল জামরুল নীড়ে—জ্যোৎস্নায়—বমায়ে রয়েছে যেন, হায়, আর রাত্রি মাতা-পাখিটির মতো ছড়ায়ে রয়েছে তার ডানা !••• আজ আমি ক্লান্ত চোখে ব্যবহৃত জীবনের বলোয় কাঁটায় চ’লে গেছি বহু দরে,—দ্যাথো নিকো, বোঝো নিকো, করো নিকো-গালা রংপসী শঙ্খের কোঁটা তুমি যে গো প্রাণহীন—পানের বাটার । ১৩২৬-এর কতকগুলো দিনের স্মরণে ঘাসের বুকের থেকে কবে আমি পেয়েছি যে আমার শরীর ঘাসের বকের থেকে কবে আমি পেয়েছি যে আমার শরীর— সবুজ ঘাসের থেকে ; তাই রোদ ভালো লাগে—তাই নীলাকাশ মদ ভিজে সকরণ মনে হয় ;–পথে পথে তাই এই ঘাস জলের মতন স্নিগ্ধ মনে হয় ;—মউমাছিদের যেন নীড় এই ঘাস ;—যত দরে যাই আমি আরো যত দরে পথিবীর নরম পায়ের তলে যেন কতো কুমারীর বুকের নিঃশ্বাস কথা কয়—তাহাদের শান্ত হাত খেলা করে—তাদের খোঁপার এলো ফাঁস খলে যায়—ধসের শাড়ির গন্ধে আসে তারা – অনেক নিবিড় পরানো প্রাণের কথা ক’য়ে যায়—হৃদয়ের বেদনার কথা— সান্তনার নিভতে নরম কথা—মাঠের চাঁদের গল্প করে – আকাশের নক্ষত্রের কথা কয় ;–শিশিরের শীত সরলতা তাহাদের ভালো লাগে,–কুয়াশারে ভালো লাগে চোখের উপরে ; গরম ব্যষ্টির ফোঁটা ভালো লাগে ;–শীতে রাতে—পে'চার নমতা ; জীবনানন্দ (১ম)—১১ ఏUS