পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাদড় উড়িবে শধ্যে পাখনা ভিজায়ে নিয়ে শান্ত হয়ে রাতের বাতাসে ; প্রতিটি নক্ষত্র তার স্থান খ:জে জেগে রবে প্রতিটির পাশে নীরব ধসের কণা লেগে রবে তুচ্ছ অণকণাটির বাসে অন্ধকারে ;–তুমি, সখি, চ’লে গেলে দরে তব ;–হৃদয়ের গভীর বিশ্বাসে অশবথের শাখা ঐ দুলিতেছে ঃ আলো আসে, ভোর হয়ে আসে। ঘাসের ভিতরে সেই চড়ায়ের শাদ। ডিম ভেঙে আছে- আমি ভালোবাসি ঘাসের ভিতরে সেই চড়ায়ের শাদা ডিম ভেঙে আছে—আমি ভালোবাসি নিস্তবধ করণ মখ তার এই—কবে যেন ভেঙেছিল—টের ধলো খড় লেগে আছে বকে তার—বহনক্ষণ চেয়ে থাকি ;–তারপর ঘাসের ভিতর শাদা-শাদা ধলোগুলো পড়ে আছে, দেখা যায় ; খইধান দেখি একরাশি ছড়ায়ে রয়েছে চাপে ; নরম বিষন্ন গন্ধ পুকুরের জল থেকে উঠতেছে ভাসি ; কান পেতে থাক যদি, শোনা যায়, সরপটি চিতলের উদ্ভাসিত সবর মীনকন্যাদের মতো ; সবুজ জলের ফাঁকে তাদের পাতালপরী ঘর দেখা যায়—রহস্যের কুয়াশায় অপরপ—রপোলি মাছের দেহ গভীর উদাসী চলে যায় মন্ত্রীকুমারের মতো, কোটাল-ছেলের মতো, রাজার ছেলের মতো মিলে, কোন এক আকাঙ্ক্ষার উদ্ঘাটনে কতো দরে ;–বহনক্ষণ চেয়ে থাকি-একা ; অপরাহু এলো বুঝি ?—রাঙা রৌদ্রে মাছরাঙা উড়ে যায়—ডানা ঝিলমিলে ; এখনি আসিবে সন্ধ্যা,---পাথিবীতে ম্নিয়মান গোধলি নামিলে নদীর নরম মুখ দেখা যাবে—মুখে তার দেহে তার কতো মদ-রেখা তোমারি মুখের মতো ঃ তবুও তোমার সাথে কোনোদিন হবে নাকো-দেখা । (এইসব ভালো লাগে)ঃ জানালার ফঁাক দিয়েভোরেরসোনালী রোদ এসে ( এইসব ভালো লাগে ) ঃ জানালার ফকি দিয়ে ভোরের সোনালি রোদ এসে আমারে ঘুমাতে দেখে বিছানায়,-আমার কাতর চোখ, আমার বিমষ মান চল— এই নিয়ে খেলা করে ঃ জানে সে যে বহুদিন আগে আমি করেছি কি ভুল পথিবীর সব চেয়ে ক্ষমাহীন গাঢ় এক রুপসীর মখ ভালোবেসে ; পউষের শেষরাতে আজো আমি দেখি চেয়ে আবার সে আমাদের দেশে ফিরে এলো ; রং তার কেমন তা জানে অই টসটসে ভিজে জামরুল, নরম জামের মতো চুল তার, ঘাঘর বকের মতো অস্ফুট আঙুল ঃ– পউষের শেষ রাতে নিম পে'চাটির সাথে আসে সে যে ভেসে কবেকার মত কাক ঃ পথিবীর পথে আজ নাই সে তো আর ; তবুও সে মান জানালার পাশে উড়ে আসে নীরব সোহাগে, মলিন পাখনা তার খড়ের চালের হিম শিশিরে মাখায় ; তখন এ পথিবীতে কোনো পাখি জেগে এসে বসেন শাখায় ; পথিবীও নাই আর ;–দাঁড়কাক একা একা সারারাত জাগে ; কি বা, হায়, আসে যায়, তারে যদি কোনোদিন না পাই আবার ' ১৬৭