পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফুরায়ে গিয়েছে সব,—একবার আসে তারা ফিরে ; তোমার পায়ের চাপে তাদের করেছ তুমি ধুলি ! তোমার আঘাত দিয়ে তাদের দিয়েছ তুমি ছি'ড়ে হে-ক্ষমতা ;—মনের ব্যথার মতো তাদের শরীরে নিমেষে-নিমেষে তুমি কতোবার উঠেছিলে জেগে ! তারা সব চ’লে গেছে ;–ভূতুড়ে পাতার মতো ভিড়ে উত্তর-হাওয়ার মতো তুমি আজো রহিয়াছ লেগে ! যে-সময় চ’লে গেছে তা-ও কাঁপে ক্ষমতার বিসময়ে—আবেগে । তুমি কাজ ক’রে যাও, ওগো শক্তি, তোমার মতন ! অামারে তোমার হাতে একাকী দিয়েছি আমি ছেড়ে ; বেদনা-উল্লাসে তাই সমুদ্রের মত ভরে মন । তাই কৌতুহল—তাই ক্ষুধা এসে হৃদয়েরে ঘেরে— জোনাকির পথ ধ’রে তাই আকাশের নক্ষত্রেরে দেখিতে চেয়েছি আমি,—নিরাশার কোলে বসে একা চেয়েছি আশারে আমি,—বধিনের হাতে হেরে-হেরে চাহিয়াছি আকাশের মতো এক অগাধের দেখা ! — ভোরের মেঘের ঢেউয়ে মুছে দিয়ে রাতের মেঘের কালো রেখা ! আমি প্রণয়িনী,—তুমি হে অধীর, আমার প্রণয়ী ! আমার সকল প্রেম উঠেছে চোখের জলে ভেসে — প্রতিধবনির মতো হে ধবনি, তোমার কথা কহি কোঁপে উঠে—হৃদয়ের সে যে কতো আবেগে অাবেশে । সব ছেড়ে দিয়ে আমি তোমারে একাকী ভালোবেসে তোমার ছায়ার মতো ফিরিয়াfছ তোমার পিছনে ? তবুও হারায়ে গেছে, -- হঠাৎ কখন কাছে এসে প্রেমিকের মতো তুমি মিশেছ আমার মনে-মনে বিদ্যুৎ জবালায়ে গেছ,—আগুন নিভায়ে গেছ হঠাৎ-গোপনে । কেন তুমি আস যাও –হে অস্থির, হবে নাকি ধারণ ! কোনোদিন ?—রৌদ্রের মতন তুমি সাগরের পরে একবার—দবার জন'লে উঠে হতেছ অস্থির । তারপর, চ’লে যাও কোন দরে পশ্চিমে—-উত্তরে,— সেখানে মেঘের মুখে চুমো খাও ঘুমের ভিতরে, ইন্দ্র-ধনুকের মতো তুমি সেইখানে উঠিতেছ। জবলে, চাঁদের আলোর মতো একবার রাত্রির সাগরে, খেলা করো ;—জ্যোৎস্না চলে যায়,—তব তুমি যাও চলে তার অাগে –যা বলেছ একবার, যাবে নাকি আবার তা বলে ! 86k