পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যা পেরেছি একবার পাব নাকি আবার তা খুজে । যেই রাত্রি যেই দিন একবার ক’য়ে গেল কথা আমি চোখ বুজিবার আগে তারা গেল চোখ বুজে, ক্ষীণ হ’য়ে নিভে গেল সলিতার আলোর স্পষ্টতা ! ব্যথার বুকের পরে আর এক ব্যথা-বিহবলতা নেমে এলো ;–উল্লাস ফুরায়ে গেল নতুন উৎসবে ; আলো-অন্ধকার দিয়ে বানিতেছি শধ্যে এই ব্যথা,— দুলিতেছি এই ব্যথা-উল্লাসের সিন্ধর বিপলবে । সব শেষ হবে ;—তব আলোড়ন,—তা কি শেষ হবে । সকল যেতেছে চ’লে,—সব যায় নিভে—মুছে—ভেসে – যে-সর থেমেছে তার সমতি তব বনকে জেগে রয় । যে নদী হারায়ে যায় অন্ধকারে – রাতে –নিরুদ্দেশে, তাহার চঞ্চল জল স্তবধ হ’য়ে কাঁপায় হৃদয় ! যে-মুখ মিলায়ে যায় আবার ফিরিতে তারে হয় গোপনে চোখের পরে, - ব্যথিতের সবপ্নের মতন ! ঘুমন্তের এই আশ্রম-—কোন পীড়া – সে কোন বিসময় জানায়ে দিতেছে এসে ! — রাত্ৰি-দিন আমাদের মন বতমান অতীতের গুহা ধ’রে একা-একা ফিরিছে এমন ! আমরা মেঘের মতো হঠাৎ চাঁদের বলকে এসে অনেক গভীর রাতে—একবার পথিবীর পানে চেয়ে দেখি, আবার মেঘের মতো চুপে-চুপে ভেসে চ’লে যাই, এক ক্ষীণ বাতাসের দলবল আহবানে কোন দিকে পথ বেয়ে —আমাদের কেউ কি তা জানে । ফ্যাকাশে মেঘের মতো চাঁদের আকাশ পিছে রেখে চলে যাই ; – কোন এক রশ্নে হাত আমাদের টানে ? পাখির মায়ের মতো আমাদের নিতেছে সে ডেকে আরো আকাশের দিকে,—অন্ধকারে, --অন্য কারো আকাশের থেকে •! একদিন বুজিবে কি চারিদিকে রাত্রির গহবর – নিবন্ত বাতির বদকে চুপে-চুপে যেমন অাঁধার চলে আসে,—ভালোবেসে—নময়ে তার চোখের উপর চুমো খায়,—তারপর তারে কোলে টেনে লয় তার ;– মাথার সকল স্বপ্ন – হৃদয়ের সকল সন্টার একদিন সেই শান্য সেই শীত-নদীর উপরে ফুরাবে কি ?—দলে-দলে অন্ধকারে তবুও আবার আমার রক্তের ক্ষুধা নদীর ঢেউয়ের মতো স্বরে গান গাবে,—আকাশ উঠিবে কোপে আবার সে সঙ্গীতের ঝড়ে । 809