পাতা:জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ (প্রথম খণ্ড).pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একবার পথিবীর শোভা দেখে,—বোম্ববায়ের সাগরের জাহাজ কখন বন্দরের অন্ধকারে ভিড় করে, দ্যাখে তাই ;—একবার স্নিগ্ধ মালাবারে উড়ে যায় ;—কোন এক মিনারের বিমষ কিনার ঘিরে অনেক শকুন পৃথিবীর পাখিদের ভুলে গিয়ে চলে যায় যেন কোন মন্ত্যুর ওপারে ; যেন কোন বৈতরণী অথবা এ-জীবনের বিচ্ছেদের বিষন্ন লেগন কে’দে ওঠে•••চেয়ে দ্যাখে কখন গভীর নীলে মিশে গেছে সেই সব হণে । মৃত্যুর আগে আমরা হে'টেছি যারা নিজন খড়ের মাঠে পউষ সন্ধ্যায়, দেখেছি মাঠের পারে নরম নদীর নারী ছড়াতেছে ফুল কুয়াশার ; কবেকার পাড়াগরি মেয়েদের মতো যেন হায় তারা সব ; আমরা দেখেছি যারা অন্ধকারে আকন্দ ধন্দেলে জোনাকিতে ভ'রে গেছে ; যে-মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ—কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে ; আমরা বেসেছি যারা অন্ধকারে দীঘ শীত-রালিটিরে ভালো, খড়ের চালের পরে শুনিয়াছি মগধরাতে ডানার সঞ্চার ; পরোনো পেচার ঘ্ৰাণ ;—অধন্কারে আবার সে কোথায় হারালো ? বুঝেছি শীতের রাত অপরাপ—মাঠে-মাঠে ডানা ভাসাবার গভীর আহাদে ভরা ; অশথের ডালে-ডালে ডাকিয়াছে বক ; আমরা বুঝেছি যারা জীবনের এইসব নিভৃত কুহক ; আমরা দেখেছি যারা বুনোহাঁস শিকারীর গুলির আঘাত এড়ায়ে উড়িয়া যায় দিগন্তের নম্ন নীল জ্যোৎস্নার ভিতরে আমরা রেখেছি যারা ভালোবেসে ধানের গুচ্ছের পরে হাত, সন্ধ্যার কাকের মতো আকাঙক্ষায় আমরা ফিরেছি যারা ঘরে ; শিশর মুখের গন্ধ, ঘাস, রোদ, মাছরাঙা, নক্ষত্র, আকাশ আমরা পেয়েছি যারা ঘরে-ফিরে ইহাদের চিহ্ন বারোমাস ; দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রাণের অন্ধকারে হয়েছে হলুদ, হিজলের জানালায় আলো আর বুলবুলি করিয়াছে খেলা, ই"দর শীতের রাতে রেশমের মতো রোমে মাখিয়াছে খন্দ, চালের ধসের গন্ধে তরঙ্গেরা রপে হয়ে ঝরেছে দ-বেলা নিজন মায়ের চোখে,–পুকুরের পাড়ে হাঁস সন্ধ্যার অাঁধারে পেয়েছে ঘুমের ঘ্রাণ—মেয়েলি হাতের পশ* ল’য়ে গেছে তারে ; মিনারের মত মেঘ সোনালি চিলেরে তার জানালায় ডাকে, ህ®