পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সিদুরের বাধাবিঘ্ন নেই—সি'র নেই তো । —‘আজ আর সিদুর পরি নি—” —“আজকাল এ-জিনিশ কুমারীরা পরে ; কয়েকদিন পরে বিধবারাও পরবে । অাপনাদের না পরলেই ভাল । —“না। সেজন্য নয় ।” একটু নিস্তব্ধতার পর অঞ্জলি—“আমার শাড়িতে কাদা লাগল কি না বুঝতে পারলাম না তো ।” ‘আমি ভেবেছিলাম অামার ধুতি সাফ আছে কি না সেই কথা আগে জিজ্ঞাসা করবেন ।” অঞ্জলি একটু হেসে —‘জিজ্ঞেস করি নি বুঝি ? এখন অন্ধকারের মধ্যে গিয়ে বিছানায় শুয়ে-শুয়ে ভাবে নারী কী রকম স্বাৰ্থপর !! —“কাল সকালে হয় তো ধুতিটা কেচে দেবার জন্য চেয়ে পাঠাবেন এই কথা ভাবতে-ভাবতে নারীর ক্ষমা ও প্রেমের মূৰ্তি হৃদয়ে নিয়ে ঘুমোব । “যা হোক, নিৰ্বিঘ্নে ঘুম হলেই ভাল । —“আশীৰ্বাদ করুন যেন ঘুমের ভিতর কোনো স্বপ্ন না দেখি । ‘কেন, স্বপ্লের কী অপরাধ ? সুন্দর স্বপ্নও তো আছে — ‘কিন্তু তবুও স্বপ্ন তো বাস্তব নয় —“যতক্ষণ দেখবে ততক্ষণ তো বাস্তব । ঘুম ভেঙে গেলে সংসারের পথে চলতে-চলতে লাখ টাকার বিনিময়েও এমন সুন্দর রুপান্তর খুঁজে পাবে না তো। অার অমল —‘অাশীৰ্বাদ করুন যেন আপনার শ্বশুরের মত সাদাসিধে ঘুমে সারাটা রাত কাটিয়ে দিতে পারি । ‘ঠাট্টা কোরো না অমল—ঠার ঘুমের মধ্যে ঢের বেদনা ও অভাবের জটিলতা রয়েছে । তুমি তা কল্পনা ও করতে পারবে না । যাকৃ— অামার বাবা যে-রকম নিশ্চিন্ত ভাবে ঘুমান —সে রকম ঘুমোতে পারি যেন !” ‘তা ঘূমি ‘হঁ্যা, এই আশীৰ্বাদই করবেন । “আশীৰ্বাদ শব্দটা খুব ভাল খুঁজে বের করেছ অমল — 88