পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেন নি, দিয়েছেন একটা, অথচ দুশোটা জীবনের কামনা ও চরিতার্থতা এরই ভিতর গুদামজাত করতে হবে—মানুষের কি আর হাফ ফেলবার সময় আছে? কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছাই আর ধুলো; পথে-পথে ব্যর্থতা বাড়িয়ে চলা। চুরুটটা মুখের কাছে তুলে নিয়ে—‘এই তো আবার মিউনিসিপ্যাল ইলেকশনের জন্য ভোট কুড়িয়ে বেড়াচ্ছি—মাঝে-মাঝে দপ করে মনে হয়, কুমায়ুনে গেলে হত না? আমার সেই বাগানটা...সেই...” মাথা নেড়ে—’ ভগবান নির্বাণ দেন নি, দিয়েছেন স্মৃতি; ভালোবাসা দিয়েছেন। সমুদ্রের মতো আকাঙক্ষা দিয়েছেন, কিন্তু দেহটাকে তৈরি করেছেন দুই রক্তি ঘুণ দিয়ে, এই যাঃ, চুরুটটা নিভে গেল।’ জুলিয়ে নিয়ে—তা কুমায়ুনে আমি তোমাদের যেতে বলি না, মোটা খাও না, জমিদারিও ভোগ করো না, সহাসনী নদীও নেই, সে ঢের টাকার শ্রাদ্ধ ভাই—সেই বাগানে গিয়ে ফলের বাগান তৈরি করা, অন্তত ত্রিশ একর আন্দাজ জমি কিনতে ফলের চারা লাগিয়ে দিতে হয়।’ চুরুটে এক টান দিয়ে—তারপর সেই পরান কথার রাজকন্যাকে পোষো, ফল ধরতে-ধরতে আট-দশটা বছর কেটে যাবে। মনে হবে যেন জেলে রয়েছ’—চুরুটটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে–কিন্তু মনের অবস্থাতে নিজেকে না খুন করে বাঁচো যদি, তা হলে দুনিয়ার দালাল মুখ তুলে চাইবেন বইকি। ফকিরের কান্নায় তিনি হার্ট ফেল করেন না। ভিটের ঘুঘুর কষ্টে প্রাণ টন-টন করে ওঠে তার। ফকির সাজা না ঘুঘু সাজা, পৃথিবীকে যদি উপভোগ করতে চাও তা হলে সৃষ্টির স্রোতের ভিতরকার অক্লান্ত সুবিধাবাদ ও অশ্রাব্য আত্মপরতাকে মনপ্রাণ দিয় গ্রহণ করতে শেখো, ভগবানও আশীৰ্বাদ করবেন, নারীও হাতের পুতুল হবে।’ [দূর থেকে দূরে সরে যায়— অন্তর্গত পৃথিবীর সুনিশ্চয় ঘন পরিচয়; প্রত্যাবর্তনের পথ নিঃশেষে মুছে— কীর্তি সফলতা আর উদ্যমের বিপুলতা দিয়ে। নির্বাসনের এক নিরন্ধ্র বলয় কাছে আসে। কারুবাসনার লয়, নিরন্ধ বলয়— ] >のぬ