পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্রের বাতাস উড়ে ভেসে চলে যায় ; টালিগঞ্জের থেকে পায় হাটতে-হাটতে ট্রাম-বাস-ট্রাক-গ্যাস লাইটের একটা বিপুল উন্মাদনার ভিতর এসে পড়ে প্রভাত। কী নিয়ে এত উন্মাদ ? এতে কার কী লাভ? : ' দেখতে-দেখতে তিন মাস প্রায় শেষ হয়ে এল। সমীর একদিন বললে—আপনি ইস্কুলের মাস্টারি পেলে নেন ? —তা নেই অবশ্যি।’ —“টেম্পরারি কিন্তু। —“কোথায় ?” —আপনার ভয় নেই—কলকাতা ছাড়তে হবে না।’ কুম না-নালাতে আন এমন একটা প্রিয় জিনিশ নয় সমীর—’ প্রভাত একটু চুপ থেকে—এক-এক সময় পথঘাট একেবারে দুঃসহ হয়ে ওঠে—যে কোনো জায়গায় পালিয়ে যেতে পারলে আমি বাচি । --মাকক অনাইল-বালতিকাল না—’ প্রভাত কোনো উত্তর দিল না। সমীর—'ছ-মাসের জন্য কাজ, ডিসেম্বর অদি—করবেন? প্রভাত—ভাবছিলাম দেশে যাব।’ —“দেশে তো সব সময়ই যেতে পারেন। —মনসা কাশীং গচ্ছতি; মনসাবাবু কাশী যায়, না মনে-মনে কাশী যায়।’ —‘কেন, ট্রেনে-স্টিমারে করে যেতেই-বা কী বাধা ?’ —‘কী রকম ? —"নিজেকে যতটা প্রেমিক মনে করি ততটা আমি নই—তাই যদি হতাম তা হলে সেই যে তিন মাস আগে বিছানাপত্র বেঁধে যাচ্ছিলাম, চলেই যেতাম, কেউ আমাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারত না—’ সমীর একটু চুপ থেকে—কিছু মনে করবেন না—আপনার দাম্পত্যজীবন বেশ নির্বিবাদ? মানে সুখের ? কী বলেন? প্রভাত একটু হেসে—বাঃ! একথা জিজ্ঞেস কর কেন তুমি ? —আপনাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্বন্ধ বেশ শান্তির তো ?’ —‘যেমন সচরাচর হয়। সমীর একটু চুপ থেকে হেসে বললে—আপনি বলছিলেন কি না নিজেকে যতটা প্রেমিকমনে করেন ততটা নন—সেই জন্যেই কেমন কৌতুহল হল—জিজ্ঞেস করলাম। পুরুষ-মহিলার সম্বন্ধ নিয়ে আমি একটা আলোচনা করছি—প্রবন্ধও লিখি—’ প্রভাত একটু হেসে—আজকালকার ছেলেরা আমাদের চেয়ে ঢের প্রদীপ্ত হয়ে উঠেছে। এই বয়সে আমরা তেঁতুলবিচি নিয়ে খেলা করতাম— প্রভাত একটু চুপ থেকে—"প্রেম বলতে তোমরা নর-নারীর নানারকম সম্পর্ক বোঝ—কী বলো সমীর ? কিন্তু আমি ঢের জিনিশ বুঝি—স্বামী-স্ত্রী সম্বন্ধই শুধু নয়; >\○の