পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কোনো লোক আসে না। গাড়োয়ানের জিন্মায় মালপত্র রেখে বাড়ির ভিতর গিয়ে ঢুকি, বাবাকে দেখা যায়। দেখলাম একটা টুলের ওপর উবু হয়ে বসে ছেলেদের খাতা দেখছেন। প্ৰণাম করি, মা এসে হাজির হন। মাকে প্রণাম করে জিজ্ঞেস করলাম—“কেমন? ভালো আছ মা ? —তুমি আসছ তা তো শুনি নি।’ —‘এই তো দেখো, এলাম।” —“তুমি তো আসবার আগে বরাবর টেলি করো। —‘এবার আর—' —“কেন ?? —“তাক লাগিয়ে দেব বলে।’ বাবা বলেন—ব্যবসার খবর কী রকম?” কোনো জবাব দিলাম না। মা—শরীর ভালো আছে তো ?’ —‘হ্যা, বেশ আছে মা।’ —‘শরীর ভালো থাকলে ভালো, ঘরের ছেলে ঘরে এসেছিস। পরে বাবা ব্যবসা করতে যাস নি—’ —“কেন ?? —‘দূর। সেই মাদ্রাজে ব্যবসা করে মানুষে ? —মাদ্রাজের সঙ্গে আমার কী সম্পর্ক ?’ —‘না, মাদ্রাজে-ফাদ্রাজে আর না। যদি করো কলকাতায়। তোর জিনিশপত্র কোথায় ?” —“তোমার জন্য দুটো শাড়ি এনেছি। —শাড়ি আবার আমার জন্য। নীলাম্বরী নয় তো ?’ মা একটু টিটকারি কেটে হাসলেন। —‘এক জোড়া চটি জুতোও এনেছি তোমার জন্য। —‘কী জুতো ?’ —‘চটি।’ —কার জন্য ?” —“তোমার জন্য মা—’ —‘ছেলের কাণ্ড দেখো? সাত জন্মে জুতো পরলাম না।’ —মাদ্রাজে স্ত্রীলোকেরা কী করে জান মা— ? —‘রেখে দে তোর মাদ্রাজের কথা—চোখ কপালে তুলে—হিলওয়ালা জুতো এনে বসবি কবে আবার একদিন আমার জন্য। তা জুতো তোর বউকে পরাস। এখন বরং—’ —“তুমি খালি পায়ে হাটবে, তা হবে না; কিংবা কোনোদিন যদি বৃষ্টি পড়ে— মা বাধা দিয়ে—’হয়েছে রে, আমি তোমার মেয়ে ইস্কুলের গুরুমা নই যে চটি পায় দিয়ে রাস্তা দিয়ে ফটর-ফটর করে বেড়াব।' গাড়ি থেকে জিনিশপত্রগুলো ফটিক নিয়ে এল। মা বললেন,—‘চা খাবি ? >8Vり