পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসে যায় যদি সাগর থাকে অপার শিশিরকণায় ভিজে। এসেছে সে আরেক ভোরের পটভূমির দিকে। সারাটা দিন মাছরাঙা আর জলের ঝিলিকে সূর্য আছে টের পেয়েছি, সংকল্প সুর তাই গভীর হল। নীলকণ্ঠ পাখির গুঞ্জরনে সর্বদাই মহাদেবের কণ্ঠজ্বালা ফুরিয়ে গেছে তবে, ভেবেছিলাম। কত যুদ্ধ, কত অশোকস্তম্ভ আলো নিয়ে এল; ইউরোপের বিপ্লবে মানব আশা ক্ষণিক জেগে বিনিপাতের শ্লেষে ফুরিয়ে গেল, তবুও সূর্যকরোজ্জ্বলতাকে ভালোবেসে। পৃথিবী তার নতুন ক্ষয় ব্যথা ভুলভালে পিছন থেকে সারাটা দিন ডোডোপাখির টানে শূন্য হয়ে যেতে-যেতে তবুও সকল সাধারণের তরে আবার নতুন আশাজনক সমাজ আকাশ গড়ে; জেনেছিলাম। তোমাকে, আমি দেখেছিলাম বেবিলনের ছাদে না দাঁড়াতেই ইন্দ্রপ্রস্থ ভোরের সূর্যস্বাদে আমার পানে তাকিয়ে আছো। অনেক দিনের মানবইতিহাসের পটভূমি শেষ করে এক নিকটতর সূর্যালোকে ভোরের আলোয় তুমি তবুও ছিলে তবু নীল আকাশে পালকে পাখি আলোকে ঠিকরিয়ে কখন হঠাৎ চলে গেছে সূর্য সঙ্গে নিয়ে জানি না কোন শাদায় কালোয় মিশেল নিবিড় রঙের দিকে; অন্ধকারে দেখে গেছে মানব পৃথিবীকে : ইতিহাসের নবীনতর এ আঁধারে অকূল মরুভূমি, তেমনি আজও ছড়িয়ে আছে—শববাহন তেমন সংহার,— তেমনি অসীম শবের প্রাবরণী খুলে ধীরে, অন্তবিহীন মৃত্যুকে আজ ঢাকছ শিশিরে করুণাময় শান্ত মৃত্তিকায়, মৃত্যু ছাড়া কিছু কি আসে যায়? >W98