পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—না, বেঙ্গলে কিছু হবে না।’ —“কেন ?? —বড় ছেলেটাকে ইউ-পিতে পুলিশে ঢুকিয়ে দিয়েছি। মেজটা বেহারে আবগারি ইন্সপেক্টর। বিজয়কে নিয়েই একটু মুশকিলে পড়েছি। হারামজাদাটা ম্যাট্রিকও পাশ করতে পারত যদি, এক এস-এস-আই কি টি-আই করে দেব আর কী। আমার আলাপ-পরিচয় সব আপে।’ —“বেশ আপেই হোক।’ —‘সে বাঙালির হয় না, আদবকায়দা জানে পশ্চিমি মুসলমান, বুঝলে ? একএকজন আমাকে নিয়ে কী যে করে উঠবে বুঝতে পারে না। সে আমার পা ধুয়ে জল খেলে যেন কৃতাৰ্থ হয়। একটু চুপ থেকে—‘কলকাতায় অনেক ডিপার্টমেন্টেও আমার খাতির; সুরেন দাশগুপ্তকে চেনো ?” —‘কোন সুরেন দাশগুপ্ত? —আবার কোন সুরেন দাশগুপ্ত—বাংলাদেশে কটা সুরেন দাশগুপ্ত থাকে। তেলের কারবার করে লাখ টাকা করে ফেলেছে।’ —আমি ভেবেছিলাম সংস্কৃত কলেজের প্রিন্সিপাল। —দূর দূর! সাত ছেলে। এক ছেলেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিলে ইনকাম ট্যাক্সে চাকরি দেবার জন্য। জুটিয়ে দিয়েছি; এই তো ছ-মাস আগে। —আমাকেও দিন না।’ —‘ভেকান্সি নেই আর ? পিসিমা—সুরেন দাশগুপ্তের ছেলেকে না দিয়ে ও-কাজটা হেমকে দিলে হত মন্দ না।’ —আহা, সে ছেলে এসে যে আমাকে বাবা ডাকল।’ একটু চুপ থেকে—‘বেশ ছেলে। অত বড় তেলের কারবারের মালিক হল বাপ, অথচ ছেলের একটুও ভড়ং নেই। শাদাসিধে। গান্ধী কাপ মাথায় দেয়। মালতীর সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিলাম—দিব্যি ঝাড়াঝাপ্টা। বললাম—‘অন্য কোনো ডিপার্টমেন্টে’ —আলাপ তো আমার সব ডিপার্টমেন্টেই আছে— —‘তা হলে কলকাতায় গিয়ে এই সম্পর্কে আপনার সঙ্গে দেখা করব— —'কাকার বাড়িতে গিয়ে দেখা করবে, তাও আবার অনুমতির দরকার হয় ? —‘না, এই সম্পর্কে ?” —‘এই ডিমটা পচা না কি রে?” —‘কই? না তো’ । —‘কেন, ছোট ডিম।” —“কেমন হাস-হাস মনে হচ্ছে।’