পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঘরের ভিতর বাবা এসে ঢুকেছেন। —“খোকা” । —আমাকে ডাকছ বাবা ? —“শুয়ে আছিস যে ?” —‘এমনিই, তুমি কখন ইস্কুল থেকে এলে ?’ —‘অনেকক্ষণ’ —সাড়াশব্দ পাই নি তো।” —বারান্দায় বসে ছেলেদের এক্সসাইজ খাতা দেখছিলাম। তোৰ মা কোথায়?” —‘রান্নাঘরেই তো’ নি —তা হবে; দেখলাম এক থালা লুচি ভেজে সুরেশকে দিল; বিকেলে তুই খাস ?’ اله —না। তুমি ? —আমি ওই ছোলা ভিজিয়ে রেখেছিলাম, একটু গুড় দিয়ে খেলাম। খাবি নাকি? —আছে আরো ?? —"ঢের আছে— বাবা ছোলা-গুড় আনবার জন্য উঠে যাচ্ছিলেন। বাধা দিয়ে—আচ্ছা আমিই নিয়ে আসব এখন, তুমি বোসো। —আচ্ছা বেশ একটু হাই তুলে, ‘বৃষ্টি পড়ছে যে রে, টের পাস নি?’ —‘হ্যা পেয়েছি ?” —“তা হলে বাপি খুলে রেখেছিস কেন? —‘কী আর হবে ? —জানলার জলের ছাট এসে টেবিলের বইগুলো ভিজে যাচ্ছে যে।’ —যাক, এমন কী আর বই ? —‘কেন, কোনো ভালো বই নেই?’ মাথা নেড়ে—না।’ বাবা বললেন—'খানিকটা খুচরো চা এনেছি —“মেজকাকার জন্য ?? —না সুরেশ কি আর এই ছ-আন পাউন্ডের চা খাবে? ---'ছ-আনা বুঝি ?’ —‘হ্যা; চা খাবি? তা খাওয়াই ভালো এই বৃষ্টি বাদলের দিনে ঠাণ্ডা লাগে, একটু গরম চা বেশ কাজ করে; সর্দি-কাশি নষ্ট হয়, মনের ভিতর একটু আশা-ভরসাও পাওয়া যায়, তোমার মাকে দিও, করে দেবে।’ —তুমি খাবে না? —“চা খাওয়ার অভ্যেস নেই আমার।’ —“নেই অবিশ্যি, কিন্তু—’ —‘খেলে ঘুম হবে না যে রে?” চায়ের মোড়কটা জীর্ণ-বিবৰ্ণ শাদ খন্দরের কোটের পকেটের থেকে বের করে বাবা টেবিলের ওপর রাখলেন। 8 S