পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—অত রাতে গরম করে খাওয়াবে তো ?’ —‘হ্যা, তা বইকি, দুধ গরম করে নিতে হবে।’ —তাই করো; স্পিরিট ফুরিয়ে যায় নি?’ —‘গেলে, কাগজ জুলিয়ে নেব।” —“কেমন, গায়ে লাগে না যেন কিছু মেয়েটার; কেমন চিমটে বিড়ালের মতো চেহারা; মনে হয় যেন একটা শুকনো পাতা হাটছে, বাতাসের এক যুঁয়ে যাবে উড়ে; আড়াই বছর বয়স হল, অথচ দেখে মনে হয় যেন এক বছরও পেরোয় নি। খেতে পায় ? না, খেতে পায় না? না কিছু গুরুতর অদৃশ্য অসুখ ? তুমি বললে—রাতে মাঝে-মাঝে টেম্পারেচার রাইজ করে ? —‘হ্যা' —তা, কালমেঘটা খাওয়াচ্ছ ?” —'খাচ্ছে।’ —“তুমিই খাইয়ে দিও, বউমার উপর নির্ভর কোরো না, তা হলে হয়তো গাফিলতি হবে।’ গোফে হাত বুলিয়ে—মথুর ডাক্তার বললেন খাওয়াতে, আমি এনেছি একটা— —আনলে বুঝি ? —ইস্কুল থেকে ফেরবার সময় নিয়ে এলাম, কালমেঘটা ফুরুলে দিও এটা। —আচ্ছা’ —’বউমা সন্ধের থেকে ঘুমুচ্ছে? খেয়েছিল?’ —‘বিকেলে খেয়েছে।’ —‘কী খেল ?’ —“জলের মধ্যে খানিকটা তেঁতুল গুড় গুলে, দু-তিন হাতা পাস্তা।’ বলে হাসতে লাগলাম। —‘এই শুধু? আর-কিছু না? —'না' —‘রোজ এই রকমই করে, —‘হ্যা এই রকম। বাবা গম্ভীর মুখে—অসুখ করেছে না কি?’ -नों' —“তবে ? —‘এই রকমই ওর রুচি কিংবা আমার উপর হয়তো মান। বাবা একটু চুপ থেকে—‘বাঁচবার ইচ্ছে নেই?’ —‘কী জানি।” দু-চার দিন কেটে গেছে—কিন্তু তবুও কলকাতায় যাওয়ার কোনো চাড় নেই। কল্যাণী তেঁতুলের জল দিয়ে ভাত খাচ্ছে। মাঝে-মাঝে দু-চারটে মরিচ পুড়িয়ে নেয়, কোনোদিন উপবাস দেয়। কিন্তু তবুও এই সুখ ছেড়ে সহসা যাওয়া হয়ে ওঠে না। খুকি দুপুর রাতে রোজ কেঁদে ওঠে। মা, বাবা, কল্যাণী কেউই কোনো সাড়াশব্দ করে না। তারপর কান্না বাড়তে থাকে, Go S