পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাখার উটি দিয়ে পিটুনি শুরু হয়—তবুও নড়তে ইচ্ছা করে না বড় একটা। বাবা বললেন—“খোকা, জেগে আছিস?' ' —‘আছি’ —'খুকি কাদছে— —“শুনেছি।’ —মার খাচ্ছে মেয়েটা, আহা-হা।’ পাখার আরো কয়েক ঘা পড়ে। চোখ রগড়াতে-রগড়াতে উঠে গিয়ে—“তুমি যে একেবারে অমানুষ হয়ে গেলে, কল্যাণী।’ কল্যাণী খেকিয়ে উঠে—“আমি পরের মেয়ে, আমাকে গাল দিও না বলে রাখছি।’ খুকি থেমে যায়। আমাকে দেখে বিছানার উপর উঠে বসে। আমি বলি, ‘বোস, দুধ গরম করেছি। কল্যাণী—“রাত-দুপুরে বড় বাপ-মা তুলে গাল! অমানুষ। তোমাদের ওই ঘরে মানুষ কটা শুনি ? ফের গাল দিয়েছ তো তোমার মেয়ের গলা টিপে আমি জলে ফেলে দিয়ে আসব।' পাশের ঘর থেকে মা ছি ছি’ করতে থাকেন; হয়তো কেঁদে ওঠেন, কিংবা নানা রকম কথা বলেন বধুমাতাকে। বাবা বলেন—“তোমাদের সকলের মাথা খারাপ হল না কি?’ ঘরের মধ্যে শোরগোল—বিষ, ঝাল, মৃদু গুঞ্জন, নালিশ, ফোপানি, অশ্রু, অভিমানের জের অনেকক্ষণ চলতে থাকে। খুকি খাটের এক কিনারে পা ঝুলিয়ে পাথরের মতো চুপচাপ বসে থাকে; বয়স গৃহিণীর মতো; জীবনের আস্বাদ সত্তর বছরের মানুষের মত; এর ভবিষ্যৎ কী, আমি ঠিক ঠাওর করে উঠতে পারি না কিছু। কাগজ জ্বালাবার দরকার হয় না, বাবা স্পিরিটের বোতল কিনে এনে দিয়েছেন। ঢেলে দেই, কাঠ ঘষে আগুন জ্বালাই, দুধ গরম করি, খুকি অবাক হয়ে একবার আগুনের দিকে একবার আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। হয়ে যায়, উপযুক্ত মতন ঠাণ্ডা করে নিতে সময় লাগে, মেয়েটি যাদুমন্ত্রে নিস্তব্ধ হয়ে চুপ করে বসে থাকে : বেতফলের মতো চোখ দুটো প্যাট-প্যাট করতে থাকে; হাতপা, মাথার চুলের ডগা পর্যন্ত রুদ্ধনিশ্বাসে প্রতীক্ষা করছে। এ সংসারের নানারকম সমস্যার কারণ যে সে, তা সে খুব ভালো করেই বুঝতে পারে। দুধের বোতলের প্রয়োজন হয় না, ঝিনুকের দরকার নেই, বাটি সে নিজের হাতে তুলে নেয়, কিন্তু অসাড় দুর্বল হাত এই সামান্য বোঝাটুকুতেই কাপতে থাকে। ༣ གྲྭ་ཚང་། ཨ་ཁི ༢ཞིག་མི་ཞ་རྩི་༢ བྷར་ཊ ཨཻ་ལ་ག་། সে। ধুতির খুঁট দিয়ে মুখ মুছিয়ে তার । একটু জল চায়—এনে দেই। দেখি, সমস্ত শরীর ঘামে ভিজে গেছে। ধীরে-ধীরে মুছিয়ে দেই। তার পর, আমার Փ Հ