পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—‘কই? দেখি—?’ দেশলাইটা জেলে আবার দেখলাম। —'এঃ, লাল-লাল চাকা-চাকা দাগ পড়ে গেছে যে একেবারে। —নরম মাংস কিনা।’ গায়ে-পিঠে হাত বুলোতে-বুলোতে—এ যে অনেক কামড়। কোথেকে কামড়াল ? আঃ, তোমার দেশলাইয়ের কাঠিটা নিভে গেল দেখছি।’ আবার জালালাম। —‘এ পিপড়ে ? না বিছে?” —না, বিছে নয়— —ভালো করে দেখেছ তো? বর্ষাকালে কত কী যে থাকে, আহা বেচারি, কিসে কামড়েছে তোমাকে মা ? يبة —তা, ওকে তুমি নিয়ে যাও তাহলে এখন— —‘কেন দু-দণ্ড রাখতে নিয়ে এতই অসহ্য হয়ে উঠল ?’ —না, তা নয়—’ —তা বইকি! তুমি মনে করো, মেয়ের সঙ্গে তোমার কোনো সম্পর্ক নেই। দেশলাইয়ের কাঠিটা নিভে গেল। —‘নিভিয়ে দিলে ?” —না, নেভাই নি—’ —তবে ? —‘এমনি গেল নিভে ’ —বাতাসে ?” —না, ছোট্ট একটা কাঠি কতক্ষণ আর জুলবে? —মশারি গুটিয়ে রেখেছ?” —‘বডড গরম ? —তাই বলে মশারি গুটাতে হয়, খোলা বিছানা পেয়ে রাজ্যের যত পোকামাকড় এসে ঢুকবে। মশারি সে ফেলে দিতে গেল। —‘আমিই ঠিক করে নেব, কল্যাণী। —“তোমার লণ্ঠন কোথায় ? নিভিয়ে ফেলেছ ? —‘Wi–’ —“ঘরে লণ্ঠন রাখো না কেন তা হলে ?’ —বাবার দেরাজে মোম আছে, নিয়ে এসো না লক্ষ্মীটি। --আমার বড্ড ঘুম পেয়েছে। পা নাড়তে ইচ্ছা করে না আর—সত্যি বলছি। বিছানার এক কিনারে পাথরের মতো বসে রইল কল্যাণী। —তা হলে তোমার ঘরের লণ্ঠনটা দিয়ে যাও। —আর, আমি অন্ধকার ঘরে থাকব ? আমার বেলায় এই রকমই তোমার ব্যবস্থা।' বিছানার আর-এক প্রান্তে বসে চুপ করে ছিলাম। কল্যাণী—“তা কি আমি আজ থেকে জানি ? অনেকদিন থেকেই জানি। এ রকম জানলে—” (* (r.