পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—“কেন ?" —‘এ প্রশ্নের উত্তর পাবে না তুমি আমার কাছ থেকে। —’হয়তো এর উত্তর আমিই জানি। —‘কেউ জানে না—কারু জানার সাধ্য নেই।’ একটু চুপ করে থেকে কল্যাণী—“তুমি যদি রাজপুত্র হতে আর আমি যদি তোমার রাজপ্রাসাদে থাকতাম, তা হলেও এই পাস্তা আর মরিচ খাওয়া ও অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে কান্না ঘুচত না আমার। —‘কী যেন ভাবছিলাম।” কল্যাণী—মা এসেছেন?’ —না’ —“কোথায় ?” —দক্ষিণের ঘরে’ —“মেজকাকাদের সঙ্গে গল্প করছেন এখনো ?” —‘হ্যা’ —‘রাত তো কম হয় নি।’ —না, কম হয় নি।' —‘বাবা শুয়ে পড়েছেন ?? —‘হ্যা অনেকক্ষণ।' —‘ঘুমিয়েছেন ? —তা বলতে পারব না—হয়তো ঘুমোন নি।’ —‘কী করে বুঝলে ?’ —‘ঘুমোলে একটু মৃদু নাকডাকার শব্দ পেতাম। খানিক আগে গলা খাকরানির শব্দ পেলাম?” —আমার মনে হয় বাবা বডড একা।’ —‘কী রকম ? —সারা দিনরাতের মধ্যে মা তার সঙ্গে বড় একটা সম্পর্ক রাখেন না ?’ মাথা হেট করে চুপ করেছিলাম। কল্যাণী—‘এই তিন বছর ধরেই তো দেখছি আমি, মা বরং পিসিমার সঙ্গে গল্প করবেন, বরং পাড়ায় যাবেন, বরং রাত জেগে কাকাদের সঙ্গে গল্প করবেন, তবুও বাবার সঙ্গে প্রাণ খুলে দুটো কথা বলবেন না।’ খুকি ঘুমুচ্ছে? —‘এই জন্য বাবার মনে কেমন একটা ব্যথা আছে—তুমি যখন কলকাতায় চলে যাও। গ্রীষ্মের ছুটিতে বাবার ইস্কুল যায় বন্ধ হয়ে, সারা দিন-রাত কী ভয়াবহ একাকী ভাবে তিনি যে কাটান, তা আমি তোমাকে বলে শেষ করতে পারব না। খাচার পাখিও এর চেয়েও ঢের আনন্দে থাকে।’ —আমাদের সকলের জীবনই তো এক একটা খাচা। —“তা বলতে পার।’ কল্যাণী বিমর্যভাবে জানলার ভিতর দিয়ে তাকিয়ে রইল। —যাক, মা তবুও তোমার মতো তেঁতুলের অম্বল দিয়ে পাস্তা খান না, কিংবা (C\وا