পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহের সঙ্গে—আমি যাব তোমাল সঙ্গে বাবা।’ —‘মেসের চৌবাচ্চার সামনে দাঁড়িয়ে স্নান করবি, বারান্দায় দৌড়বি, রাস্তায় ছেলেরা এসে যে-ছাদে ঘুড়ি ওড়ায় সেই দলে মিশে যাবি, আমার কোলে বসে থাকবি, পাথর কাকর ভরা ভাত আর গোরুর মাসকলাই, ঠাণ্ডা ট্যাড়সের তরকারি আর ছিবড়ের মতো মাছ; যাবি রে?” —যিাব।” —“বেশ, আর আমি যখন কাজে বেরিয়ে যাব তখন তুই কী করবি ? চুপচাপ। —‘একটা কাথা দিয়ে ঢেকে আমার বিছানায় ঘুম পাড়িয়ে রেখে দেব তোমাকে; না ?” মাথা নেড়ে—‘হ্যা।’ —‘খুব লক্ষ্মী মেয়ের মতো ঘুমুবে।" —‘মেসের বাবুদের ঝালাপালা করবে না তো?” চুপ করেছিল; বললাম, 'বলো। করব না’ —‘কলব না' —তারা যদি কান মলে দেয়, কাদবে না।’ —‘মেসের বাবুরা বড় দুষ্টু যে রে খুকি, বিড়ির আঁস দিয়ে তোমার পিঠে ফোশকা টেনে পাখির বাচ্চার মতো মাংস বের করে দেবে তোমার মাথায়। ফড়িঙের মতো করে দেবে যে রে ।” অবোধ ভাবে শুনছিল মেয়েটি। ধীরে-ধীরে মাথায় হাত বুলিয়ে—না, রে, মেসে গিয়ে কাজ নেই।’ একটু চুপ থেকে, আমারও আর ইচ্ছে করে না যেতে। তোমাকে নিয়ে খড়ের ঘরে সারাটা জীবন যদি কাটাতে পারতাম খুকুরানী। আজ রাতে বৃষ্টি নেই। কদমগাছে একটা পেচা বসে ডাকছিল। মেয়েটি—“ওই কে ডাকে বাবা—’ —লক্ষ্মী পেচা —‘কেন ডাকে ? কাদে ?” —“না কাদে না’। —‘কী কলে ?’ —“বেড়াতে বেরিয়েছে। —“বেলাতে ?” —‘হ্যা, আজ বৃষ্টি নেই কিনা।’ ৬৯