পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—“সে জানে সে তার দাদার বাড়িতে আছে।’ —কই? দু-ভায়ে বনিবনা কোথায়? —"কেন ? কী রকম ? —তার খাবার সময় তুমি গিয়ে দাড়াও ? বাবা একটু চুপ থেকে—সকালবেলা তো আমি ইস্কুলে চলে যাই। —“বেশ, রাতের বেলা ?” —আমি খুব তাড়াতাড়ি খেয়ে শুয়ে পড়ি এই আমার চল্লিশ বছরের মা তো আছেনই—তা তুমি যদি মনে করো আমি না যাওয়াতে সুরেশ ক্ষুন্ন হচ্ছে, তা হলে আজ থেকে আমি গিয়ে বসব।' —বসবার দরকার নেই।’ —দরকার নেই ? —‘একটু বসে পায়চারি করে চলে আসলেই হবে, আপনি ওখানে গিয়ে বসলে মেজদার কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যাবে। —‘কেন ?" —‘অন্তত কথাবার্তার ধারা বদলে যাবে, আধ্যাত্মিক হয়ে উঠবে।’ —“সেটা তোমরা চাও না অবিশ্যি।’ —না।” —আচ্ছা, তা হলে গিয়ে দু-চার মিনিট পায়চারি করা যাবে। —‘হ্যা, দু-এক মিনিট থেকে, আপনি আপনার ঘরে চলে গেলে, কেউ আপনার পথ আটকাতে যাবে না, লৌকিকতাও বজায় থাকবে।’ —“বেশ কথা, বেশ কথা। —‘হরিচরণ কিন্তু একান্তই মেজদার, —তা ছাড়া আবার কার ? সুরেশের জন্যই তো রাখা। —না, সেই কথাটাই সব সময় যেন আপনাদের খেয়ালে থাকে। সেই জন্যই বলছিলাম।” মা—বউমা হয়তো মাঝে-মাঝে কিছু ফরমাস দিতে পারে। —তা যেন না দেয়।” একটু কেশে পিসিমা—ব্রান্নাঘরের কোনো কাজ হরিচরণ করতে পারবে না।’ বাবা—না, রান্নাঘরের জন্য তাকে তো রাখা নয়।’ —বাজারে হেম যেমন যাচ্ছিল তেমনি যাবে। আপনারা ওকে জল তুলে বা কাপড় কেচে দিতে বলতে পারবেন না। এ-সব বউমা আর বউঠান যেমন করছিল তেমনই করবে। সন্ধ্যার সময় বাতিও বউমাই জ্বালবে।’ বারা হেসে, কারু কোনো আপত্তি নেই।’ —হরিচরণ মেজদার হাত-পা টিপে দেবে, কাপড়-চোপড় সাবান দিয়ে ধুয়ে দেবে। বিছানা পাতবে, ঘর ঝাট দেবে, জিনিশপত্ৰ সাজাবে-গোছাবে, পাইখানার জল দেবে, পাকা চুল বেছে দেবে—এই সব আর-কী? —“বেশ কথা; এখন চাকরটা কী-রকম হয়; আনাড়ি হলে তো সুরেশের বডড কষ্ট।’ ס\ף