পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাবা বাধা দিয়ে—"সে বাড়ি নদীতে ভেঙে গেছে। এখন একেবারে নদী এড়িয়ে প্রায় সাত-আট মাইল দূরে ভিতরের দিকে বাসা করেছেন। একটু গলা খাকরে, “তোমাকে—চিনিয়ে দিচ্ছি। এক চিলতে শাদা কাগজ ছুড়ে দিয়ে বললেন—“দেখো।' মিনিট পাঁচেক পরে—“চিনলে ?’ —‘হ্যা, ওদিকে আগে তো বন-জঙ্গল ছিল বলে জানতাম।” —‘একটা মস্তবড় প্রান্তরও ছিল। এখন বসতি হয়েছে অনেক। প্রায় কুড়ি-পচিশ বিঘা জমির ওপরে চমৎকার সুন্দর বাড়ি নবাবজাদার।’ —‘কী রকম বই আছে লাইব্রেরিতে? —‘প্রায় হাজার তিরিশেক বই, প্রায়ই ইংরেজি ক্লাসিক।’ —“তুমি গিয়েছ সেই লাইব্রেরিতে? —‘হ্যা, গিয়েছি কয়েকবার।’ —নতুন বই আছে? .-তে সালে দল খুব যা-চাও সে-রকম বই পাবে আশা तें ।’ —‘গেলে হয় এক দিন।' —‘মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যানের চিঠি নিয়ে যেও।” বাবা বলতে লাগলেন, শব্দটার মানে দেখে এসো, শুধু শব্দার্থ নয়, সেটা আমি জানি খানিকটা, আমি চাই এই শব্দটির আদ্যোপান্ত ইতিহাস, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা।’ বাংলা খবরের কাগজটা পড়ছিলাম। দক্ষিণের ঘরে শুনছিলাম মেজকাকা ও মায়ের হাস্যকলরব বেশ জমে উঠেছে। পিসিমা গলায় আঁচল জড়িয়ে এসে—‘দাদা।’ খাতার থেকে চোখ না তুলেই—‘কী, কী মনে করে ? —মেজদাকে যে রোজ মিঠাই কিনে দেওয়া হচ্ছে সে কথা তোমাকে বলি নি।’ —না, শুনি নি আমি।” —‘রোজ বিকেলে, রসগোল্লা, সিঙ্গাড়া, পান্তুয়া, অমৃতি খান। —“বেশ তো, বাজারের থেকে না এনে ঘরেই করে দিতে পারতে।’ —তা, পয়সা অনেক জমে গেছে, ক্ষিতীশ আমাকে বললে—বাকিতে আর আমি দিতে পারব না।’ —"ক্ষিতীশকে খাতা নিয়ে আসতে বলো।’ —“আচ্ছা।’ —“আর-একটা কথা।” —বসে বলো, দাড়িয়ে রইলে ? হেম একটা মোড়া এনে দাও।” —না, না, আমার বসতে হবে না, এক মিনিট শুধু।” চৌকাঠের ওপর বসে—‘মাঝে-মাঝে গাড়িতে বেড়াতে গেছেন, সেই ভাড়াটা।’ —“আচ্ছা।’ —আর একটা ইংরেজি খবরের কাগজ রোজ দিতে বললেন। —অমৃত বাজার কি একটা রাখা হয় না হেম? —“মেজকাকা স্টেটসম্যান চান। Գ Ն,