পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—“তারপর রান্নাঘরে গিয়ে কী করো ?’ —‘পানটা নিশ্চয় বউমা সেজেছিল আজ। . —উনুন জ্বালাও ? না আগেকার দিনের বাসন মাজো ? —বউ এত চুন খায়?” —‘হ্যা চুন খেতে খুব ভালোবাসে, শরীরে ক্যালসিয়াম খুব কম কিনা। —‘ক্যালসিয়াম কী ?’ —যা দিয়ে হাড় তৈরি হয়; কল্যাণীর সেই জিনিশের খুব অভাব, তার মেয়েরও। দু-জনেরই রিকেট। —“রিকেট কাকে বলে ?” —যাদের শরীরে চুন জাতীয় জিনিশ, আরো নানারকম সার পদার্থ ঢের কম, ভিটামিন কম, ভিটামিন এ-বি-সি-ডি জীবনী শক্তির যত সব মাল মশলা সবই নিবন্ত প্রদীপের মতো জুলছে আর-কি ?’ —আজ বডড চুন দিয়েছে এই পানে। আমি একশোবার নিষেধ করে দিয়েছি তবু যদি কানে ঢোকে। এরপর দেখছি একটা পান নিজের তৈরি করে খেতে হবে।’ —আগের রাতের উচ্ছিষ্ট বাসনগুলো আগে মেজে নাও ?? —“তোমার বউ তো আর মেজে দেবে না আমাকে— —তারপর উনুন জ্বালাও?’ —না, বাসন আগের রাতে মেজে রাখি। —‘রোজই? সমস্ত ? —‘হ্যা, তবে কি আবার থোক-থোক করে মাজব না কি?’ —‘চেপে যে-দিন ঝড়-বৃষ্টি আসে। —বললাম তো, রোজই মেজে রাখি রে, তুইও নিজের চোখে দেখেছিস কত ? আজ যে বড় জিজ্ঞাসা ? —আগে তো ছাতা নিতে না।’ —‘এখনো নেই না।’ —‘বৃষ্টিতে এত ভিজতে পারে মানুষ ? —ঘাটলার পাশে মস্তবড় জামগাছটা আছে রে। —তাতে বৃষ্টি মানায়। —মানিয়েই তো যায় এক রকম দেখি। —সকালবেলা প্রথম উনুন জ্বালাও গিয়ে ? —‘হ্যা রে।’ —উনুন জ্বালানো কি সোজা ব্যাপার মা, বিশেষত এই বৃষ্টি-বাদলের দিনে সমস্তই থাকে স্যাতসেঁতে হয়ে। সমস্ত বাড়িঘরে শুকনো ডালপাতা জোগাড়, কয়লা ভাঙা, গোবর দিয়ে মেখে ঘুটে তৈরি করা। —‘বড় তো ভিজে ন্যাকড়া নিয়ে বসলি রে ? খুকি ঘুমিয়েছে? —‘হ্যা।’ —আর বউমা ?’ —‘পড়ছে বোধহয়। —‘কী বই ? “ልby