পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

—কেউ কেউ সত্তর ঘেঁষে । ইয়ং ব্লাডের অভাববোধ করছিলেন কি কালীশঙ্করবাবু ? কী-জানি, এ বিষয়ে তিনি মনে-মনে কিছু স্থির করে উঠতে পারেন নি । ভাবছিলেন হয় তো কমিটিতে উকিল ছেণকরণরা এলে অবস্থা আরো খারাপ হবে । বাংলাদেশে মফস্বল কলেজ কমিটিতে অন্তত—বরে আনি-চোদ আনি জায়গা উকিলদের ছেড়ে দিতে হবে । তুমি-আমি দিচ্ছি না, এটা অলিখিত চুক্তি অনেক দিনের—কিন্তু কণর সঙ্গে ? জানা নেই। কিন্তু ছেড়ে দিতে হবে । কে চালাবে দেশ, উকিলরণ ছাড়া ? উকিলদের মামলা মিটিয়ে কলেজ কমিটির বাকি জায়গাটা মুখ চেনা ডাক্তার বা জমিদারের ঝাড়-বংশের জন্যে ছেড়ে দিতে হবে । শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপার—কিন্তু শিক্ষণদণতাদের জায়গা কোথায়, কলেজ কমিটিতে ? ওদের ? ওদের নিয়ে কী হবে ? ওরা তো সোয়াশ-দেড়শ টাকার মাস্টার । ওরা অণর হোমিওপ্যাথ ডাক্তাররাই তো স্বাধীন ব্যবসা চালাচ্ছে দেশে—সব ঘাটের জল খেয়ে তারপর ছোট শিশির জল ধরেছে । কেউ-কেউ কলেজে ঢুকে পড়ছে । যখন এক চুপচাপ বসে থাকেন নিজের বাড়িতে দোতলার করিডরে— ইজিচেয়ারে—তখন তার মনে এ-রকম দু-চারটে কথা নড়াচড়া করে বটে, কিন্তু তিনি নিজে তো চারশ টাকা মাইনে পাচ্ছেন—শিগগিরই পাচশ, হরিলালবাবুকে একটু তাবে রাখলে সাড়ে পঁচিশ হয়ে যাবার সম্ভাবনা—সোয়া পাচশ হয়ে যাবে এই মে মাসের গভর্নিং বডির বাসস্তী-নিদণঘ বৈঠকে । কথা দিয়েছেন হরিলালবাবু। বোকা হ্যাচক ইশারাগুলোর গলা টিপে শেষ করে ফেলেন কালীশঙ্করবাবু। প্রিন্সিপাল তার নিজের নিরালা কোয়ার্টার্সও পাৰেন—মস্ত বড় কলেজ ময়দানের একটেরে—নিম ঝাউ আমলকী জামগাছের ছায়া-রোদের ভিতর বেশ বড়-সড় সুন্দর একটা কাঠের বাংলো বাড়িতে । অ্যাসবেসটসের ছাদ । এক তলা বাড়ি–অনেক উচুতে মেঝের পাটাতন । চমৎকার চোঙের মত কাঠের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে হয়—যেন সুখী স্বস্তিকাম শাস্তিপ্রাণ শ্রমণ তার নির্জন আশ্রমমন্দিরে প্রবেশ করছে । আঃ আ|হ-হ-হ-হ-হ । চোতের বাতাসে পিঠ-বুক জুড়িয়ে নিতে-নিতে ভাবছিলাম। কালীবাবু তো এই পদ্মার পারের দেশের লোক নন। তিনি এসেছেন বেহার-বাংলার প্রত্যন্ত থেকে, অথচ এ দেশের লোকের মন মজিয়ে তিনি এদেরই মামা-মেসোর চেয়েও গলায়-গলায় আজ । সব সময়ই জলপাই మ8