পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাটির নিঃশ্ৰেয়স (শব্দটি সম্প্রতি কলকাতার তাস-সিগারেট-বই-বুকনির দুচারজন বৃত্তান্তপণ্ডিতের কাছ থেকে শিখে এসেছেন ) নিঃশ্রেয়সের চিন্তা, মানে ঠিক কল্যাণকামনা করেন । কিছু নয়—বোকা হরিলালকে হাতে রাখতে হয় । একটু তাইয়ে দিলেই টোপ গেলে হরিলাল । টাকা করে নিয়েছিস, এখন তোর বড় কথা হচ্ছে মান । মানী হবি ? বেশ তো হ না ; কে তোকে বাধা দিচ্ছে হরিলাল ? অামি পথ ছেড়ে তোকে কলেজের সেক্রেটারি করে দিয়েছি । তুই যদি নামে প্রিন্সিপাল হতে চাস, বেশ তো হবি ; আমার কোনো আপত্তি নেই ; সপ্তাহে এক-আধ ঘণ্টা এসে হিন্দু-ল পড়িয়ে যাবি ফোর্থ ইয়ারের ছেলেদের ; সে ঘণ্টায় আমার ইংরেজির ক্লাসটা আমি বাদ দিয়ে দেব ; প্রিন্সিপালের কামরায় ইজিচেয়ারে বসে থাকব—ফ্যান টিপে দিয়ে ; আমাকে পাচশ টাকা মাসোয়ারা দিলেই হবে । মান ! মানকচুপাতার আড়ালে গা ঢাকা দিয়ে কত মানের কাজই তুমি করেছ হরিলাল ! কোন কোন সধবা-বিধবার কোন ছেলেটি-মেয়েটি তোমার, জানা নেই বুঝি আমাদের ? ‘হ্যা, কালীশঙ্করবাবু— ‘আজ্ঞে বলুন । কালীশঙ্কর ভেনেস্তার চেয়ারটা একটু কাছে টেনে নিয়ে, হরিলালের দিকে এগিয়ে, খুব বেশি ঘেঁষে নয়—চেয়ারটাকে পেতে নিয়ে বললেন, ‘আজ্ঞে—কেন ছোট ছেদো কাঠের চেয়ারে বসেছেন আপনি । প্রিন্সিপাল মানুষ—আপনার জন্যে একটা কেম্বিসের ডেকচেয়ার জুটল না । মতিলাল । ওরে এই মোতে হারামজাদা 1" ‘না—না—কিছু দরকার নেই হরিলালবাবু—বেশ ভাল চেয়ার—বিলিতি ভেনেস্তা—' ‘ভেনেস্তা আগবণর দিশি-বিলিতি আছে নাকি—" ‘আছে দিশিও এক রকম ! পাইন কাঠের মতন ; তবে খুব খেলো জিনিস' —জলপাইহাট কোর্টের হাজার-দেড় হাজার বাদীর উকিল হিমাংশু চক্রবর্তী বললে । হিমাংশুর বয়স পঞ্চাশের নীচে । কলেজ কমিটির মেম্বার হিমাংশু । ‘আমার ডেকচেয়ারটা আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি স্বার’—বললে হিমাংশু কালী শঙ্করবাবুকে । ఏ&