পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘হরিলালবাবুকে বুঝবার মতন আলি সাহেবের মতন একজন দরাজ, দরবারি মানুষ থাকা চাই। না হলে কী করে জোর পাবেন হরিলালবাবু?—সহজভাবেই কথাটা বললেন বঙ্কিম দত্ত । ভাব গ্রহণ করে খুশিও হলেন হরিলাল । তবে বেশি নয় । কথাটাকে আগরে গুছিয়ে বাড়িয়ে আগস্ফোট করে বলা উচিত ष्ट्रित्न । ‘ব্রজমাধববাবু ষেন সব ভেঙে ফেলতে চান । জানেন না একটা জিনিস গড়ে তোলা কী রকম শক্ত । ত্রিশটা বছর ধরে, প্রাণপণত করে এই কলেজটা সৃষ্টি করেছেন হরিবাবু । ছাগল দিয়ে ধান মাড়িয়ে খান তো ব্রজবাবু, মানুষের পৃথিবীর খবর রাখেন না”—হিমাংশুবাবু বললেন । চুপ করে বসে আছে কালীশঙ্কর, কোনো কথা বলছে না। আমার কলেজের নুন খেয়ে ওর পেট জাম্বুবানের মত, কিন্তু বাপের হাত-তোলা তুমি শুধু খাবেই বুঝি কালীশঙ্কর ; বীপের সমুখে বসে দুটো ভাল কথা শোনাতে পারবে না তাকে ? হরিলালবাবু প্রিন্সিপালের দিকে তাকালেন । হরিলালবাবুর ও-রকম চোখে চাউনির মানে জণনা অাছে কালীশঙ্করের । গলাটা খণকরে নিয়ে তিনি বললেন, ‘ব্রজমাধববাবু গার্জেনদের নমিনেশন পেয়েছেন বলেই আমাদের মাথা কিছু কিনে ফেলেন নি । ফিনান্সের কিছু বোঝেন না তিনি । আমি তাকে ওকমিটিতে ঢুকতে দিচ্ছি না। হরিলালবাবুর কোনো দোষ নেই । হরিবাবুর মত উদার মানুষ জলপাইহাটিতে নেই। বাংলাদেশে খুব কমই আছে। অনেক দেশ তো ঘুরেছি, অনেক লোক দেখেছি আমি ওয়াজেদ আলি সাহেব। জেনে শুনেই কথা বলছি । আমাদের ভাগ্য আগমণদের মধ্যে ছিলেন উনি, ওঁকে অণমরা পেয়েছি, সেই জন্যই এত গুলো লেকচারার প্রফেসর করে খাচ্ছে । এ না হলে এদের গতি ছিল কী ? কে পুছত এদের ? তিনি যা করেন ভালর জন্যই করেন। বুদ্ধি প্রতিভা হরিবাবুর তো বাংলাদেশের সেরা মানুষদের মত। কলকাতায় থাকলে তিনি বড় মেজ মন্ত্রী হতে পরতেন । আমাদের জন্যেই স্বার্থত্যাগ করে এখানে আছেন । ব্রজমাধববাবু উড়ে এসে জুড়ে বসে আজ অনেক বারফটক কথা বলেছেন । কিন্তু এ-রকম ঘোড়া ডিঙিয়ে ঘাস খাবার বুদ্ধি নিয়ে তিনি নিজেরও উপকার করবেন না, কলেজেরও না । যিনি ত্রিশ বছর ধরে হিতব্ৰত নিয়ে এখানে আছেন জলপাইহাটির কলেজের মানবতার কিসে উপকার হয় ১১২